মূর্তি, ভাস্কর্য, ছবি সম্বন্ধে সম্যক ধারণা:-
-------------------------------------------------------
মূর্তি আর সাধারণ চিত্র, ছবি এক নয়। তাছাড়া এক সময় ওটার দরকার ছিল। কারণ, ইসলাম গ্রহণের আগে ওখানকার অধিকাংশ মানুষ ছিল পৌত্তলিক। তাদের মনে-প্রাণে পৌত্তলিকতা গেঁথে ছিল। মূর্তি বা চিত্র দেখলেই তাদের আগেকার আরাধনার কথা মনে পড়ে যেত। এমনকি দেখা গেছে তারা যখন নামাজে দাঁড়াতেন তখন তাদেঁর বগলের চিপায় মূর্তি থাকত। সেটা যাতে না রাখতে পারে সেজন্য রুকুতে হাত উঠানোর রেওয়াজ চালু করেন রসুল। রুকুতে হাত উঠালে তাদের বগল তলা থেকে মূর্তি মাটিতে পড়ত। ঐ জাতিটাকে মূর্তিপূজা থেকে সরানোর জন্য সব ধরনের চিত্র, মূর্তি, ছবি আঁকা নিষেধ করা হয়েছিল।
এক্ষেত্রে আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যায়। মদপান হারাম হওয়ার আগে ধীরে ধীরে মদের উপর নেতিবাচক আদেশ দিতে থাকেন আল্লাহ। এরপর যখন মদ একেবারে নিষেধ হয়ে যায় তখন মদ খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত কাঠের গ্লাসও নিষিদ্ধ করা হয়। কেন? যাতে তাদের মদ্য পানের উপাদান না দেখতে হয় এবং পুরনো অভ্যাস চাগিয়ে না উঠে। কিন্তু একটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর এখন আর কাঠের গ্লাস (মগ) নিষিদ্ধ নেই।
মূর্তিপূজা যখন মুসলিমদের মন থেকে একেবারে মুছে গেছে তখন আর ভাস্কর্য, চিত্র, ছবিতে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। এখন আপনার সামনে একটা মূর্তি এনে দিলেও আপনার মন থেকে ওটার প্রতি ভক্তি আসবে না। এবং আপনি ঐ মাটি বা কাঠ পাথরের মূর্তিকে কখনোই সৃষ্টিকর্তা বা ভালো মন্দের মালিক মনে করে শিরক করবেন না। সুতরাং এখন ওগুলো থাকলেও সমস্যা নেই।
আপনাদের সমস্যা হচ্ছে আপনারা কমনসেন্স খাটান না। কমনসেন্স না খাটিয়ে কেবল অন্ধভাবে দলীলের অনুসরণ করেন।
ছবি, মূর্তি দেখলে আমাদের আর পূজা করার ইচ্ছা জাগে না। সম্মান জানাই না। কোন কিছু প্রার্থনাও করি না। ওগুলো এখন ঐতিহাসিক স্থাপনা বা দর্শনীয় বিষয় হিসেবে আমাদের ঘরে, যাদুঘরে বা রাস্তায় শোভা পায়। যেমন করে শোভা পেত আল্লাহর নবী সোলায়মান (আ) এর ঘরে বাড়িতে।
আধুনিক যুগে ছবি তোলা নিরাপত্তার জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। ভিসা-পাসপোর্টে, পরিচয় নিশ্চিত করতে ছবি লাগে। ইসলাম অনেক ডায়নামিক জীবন ব্যবস্থা। কিন্তু আপনারা আগেকার সময়ের জন্য প্রযোজ্য দলীল দেখিয়ে ইসলামকে স্ট্যাটিক বানিয়ে ফেলেছেন, পশ্চাদপদ বানিয়ে ফেলেছেন। কিছু হলেই একগাদা হাদিস পেস্ট করতে থাকেন। অথচ ঠিকই নিজের প্রয়োজনে ছবি তুলছেন। প্রোফাইলে চমকপ্রদ ছবি টানিয়ে রেখে স্ববিরোধিতা করে যাচ্ছেন।
লিখেছেন- Atahar Hossain
No comments:
Post a Comment