দাজ্জালের রূপক বর্ণনা এবং মেশকাতে এবনে সাইয়াদ
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০১৪, ১৮:৩৭বিশেষ নিবন্ধমন্তব্য যোগ করুন(দেশেরপত্র)
মাননীয় এমামুয্যামানের লেখা থেকে: চৌদ্দশ’ বছর থেকে মোসলেম উম্মাহর ঘরে ঘরে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা চোলে আসছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবৎ বহু এসলামী চিন্তাবিদ, জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্ব এবং ধর্মের ধ্বজাধারী তথাকথিত আলেম মাওলানারা দাজ্জালকে নিয়ে অনেক বই লিখেছেন, গবেষণা কোরেছেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ তারা রসুলাল্লাহর দাজ্জাল সম্পর্কিত রূপক বর্ণনাগুলিকেই বাস্তব হিসেবে ধরে নিয়ে এক মহা শক্তিশালী দানবের আশায় বসে আছেন। তাদের এই বিকৃত আকিদার ফলশ্র“তিতে তারা ইতোমধ্যেই পৃথিবীতে আসা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অস্বীকারকারী এবং নিজেকে রব দাবিদার দাজ্জালকে চিনতে পারছেন না। তারা বুঝতে পারছেন না যে তাদের অজান্তেই মানবজাতির মহাবিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে আজ থেকে ৪৭৬ বছর আগেই দাজ্জালের জন্ম হোয়েছে এবং বর্তমানে সে তার শৈশব-কৈশোর পার হোয়ে যৌবনে উপনীত।
হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, এ যামানার এমাম, এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী কোরআন-হাদিস-বাইবেল, ইতিহাস এবং আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ কোরেছেন যে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতাই হোল রসুলাল্লাহ বর্ণিত দানব দাজ্জাল। দাজ্জাল সম্পর্কে লেখা যামানার এমামের “দাজ্জাল? ইহুদি-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’!” বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক আলোচিত এবং আলোড়িত বিষয়, যা ছিলো ২০০৮ সালের বাংলাদেশের বেস্ট সেলার বই। পাঠকদের ব্যাপক চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে আমরা বইটিকে ধারাবহিকভাবে পত্রিকায় প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এই লেখাটিও উক্ত বই থেকেই সম্পাদিত।রসুলাল্লাহর দাজ্জাল সম্পর্কিত রূপকভাবে বর্ণিত হাদিসগুলোকে পর্যালোচনা কোরলে বর্তমান ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতারই প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়। রসুলাল্লাহ বর্তমানের ইহুদি- খ্রিস্টান বস্তুবাদী ‘সভ্যতা’-কে একটি অতিকায় এবং শক্তিশালী দানব হিসাবে রূপকভাবে (অষষবমড়ৎরপধষষু) বর্ণনা কোরেছেন কারণ, রসুলাল্লাহর সময়ের নিরক্ষর আরবদের যান্ত্রিক সভ্যতার প্রযুক্তিগত কৌশলের ওপর ভিত্তি করা মহা-শক্তিশালী সভ্যতা সম্বন্ধে বোঝাবার চেষ্টা অবশ্যই অর্থহীন হোত, তাদের পক্ষে তা বোঝা মোটেই সম্ভব ছিলো না। যেমন রসুলাল্লাহ যদি বোলতেন, দাজ্জাল এ্যারোপ্লেন নামক একটা যন্ত্র বানিয়ে আকাশ দিয়ে ঘণ্টায় এত হাজার বা এত লক্ষ মাইল বেগে উড়ে চলবে তাহোলে তাঁর আসহাবরা কিছু বুঝতেন কি? নিঃসন্দেহে বলা যায় তারা এই বর্ণনা থেকে কিছুই বুঝতেন না। তাই আল্লাহর রসুল এটাকে রূপকভাবে বর্ণনা করে বোললেন- “দাজ্জালের গতি হবে অতি দ্রুত। সে বায়ুতাড়িত মেঘের মতো আকাশ পথে উড়ে চলবে।”চৌদ্দশ’ বছর আগের নিরক্ষর আরবদের পক্ষে সম্ভব না হোলেও বর্তমানে দাজ্জাল সম্বন্ধে মহানবীর ভবিষ্যদ্বাণীগুলি যাচাই কোরলে সন্দেহের কোন স্থান থাকে না যে মহাশক্তিধর পাশ্চাত্য বস্তুবাদী সভ্যতাই হোচ্ছে আল্লাহর রসুল বর্ণিত সেই নির্দিষ্ট দাজ্জাল। বিশ্বনবীর যেসব হাদীসে আমরা দাজ্জালের বন্দি হোয়ে থাকার ও যথাসময়ে প্রকাশ হবার কথা পাই সেগুলির প্রকৃত অর্থ এটাই; তখনকার দিনের মানুষকে রূপক অর্থে বলা। কোন অজানা দ্বীপে দাজ্জাল শৃংখলিত হোয়ে থাকাটা তার ঐ সম্ভাবনার (চড়ঃবহঃরধষরঃু) কথাই রূপকভাবে বর্ণিত। এখানে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত এবনে সাইয়াদ (রাঃ) সম্বন্ধে কয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন, কারণ প্রকৃত ব্যাপার বুঝতে না পেরে একে অনর্থক অতি গুরুত্ব দেয়া হোয়েছে, এমনকি মেশকাতে একটি পুরো অধ্যায়ই এবনে সাইয়াদের ওপর দেয়া হোয়েছে, অথচ এটা এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই নয়।ব্যাপারটা এই: বিশ্বনবীর সময় মদিনায় এক ইহুদি পরিবারে এক শিশু জন্ম নেয়। শিশুটি বোধহয় কিছুটা অস্বাভাবিক ছিলো, কারণ এ খবর মহানবীর কাছে পৌঁছলে তিনি তাকে দেখতে যান। কিন্তু একে সেই নির্দিষ্ট দাজ্জাল বোলে আল্লাহর রসুল অবশ্যই মনে করেন নি।
যেখানে তিনি জানেন যে, প্রকৃত দাজ্জাল তাঁর বহু পরে মাহ্দী (আঃ) ও ঈসার (আঃ) সময় আবির্ভূত হবে এবং ঈসার (আঃ) হাতে ধ্বংস হবে সেখানে তিনি তাঁর নিজের পবিত্র উপস্থিতির সময় মদিনায় কাউকে সেই নির্দিষ্ট দাজ্জাল বোলে মনে কোরবেন কেমন কোরে? তাছাড়া তিনি তো নিজেই বোলেছেন যে দাজ্জাল মক্কায় এবং মদিনায় প্রবেশ কোরতে পারবে না (হাদিস- বোখারী এবং মোসলেম)। অথচ এবনে সাইয়াদ (রাঃ) জন্মেছেনই মদিনায় এবং মক্কাতেও গেছেন হজ্ব কোরতে। তাছাড়া এবনে সাইয়াদ (রাঃ) মোসলেম হোয়েছিলেন এবং তার দাজ্জাল হওয়ার সম্বন্ধে নিজেই বোলেছেন- আল্লাহর রসুল কি বলেন নি যে, দাজ্জালের কোন সন্তান হবে না, অথচ আমার সন্তান আছে; তিনি কি বলেন নি যে, দাজ্জাল কাফের হবে আর আমি মোসলেম (হাদিস- আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) থেকে মোসলেম)। মোট কথা মদিনার আবু সাইয়াদ (রাঃ) দাজ্জাল ছিলেন না এবং তার দাজ্জাল হবার কোন সম্ভাবনাই ছিলো না। যে ঈসার (আঃ) হাতে মৃত্যুর কথা বিশ্বনবী ভবিষ্যদ্বাণী কোরে গেছেন, সেই ঈসার (আঃ) বহু পূর্বেই এবনে সাইয়াদের (রাঃ) স্বাভাবিক মৃত্যু হোয়েছে। কখনো কখনো আল্লাহর রসুল নবুয়াতের মিথ্যা দাবিদার ও অত্যাচারী শাসকদের দাজ্জাল বোলে অভিহিত কোরেছেন, কিন্তু তা আখেরী যামানার সেই নির্দিষ্ট দাজ্জাল নয় যার সম্বন্ধে নবী রসুলরা মানবজাতিকে সতর্ক ও সাবধান কোরে এসেছেন। অথচ বুঝতে না পেরে এবনে সাইয়াদকে (রাঃ) সেই প্রকৃত দাজ্জাল বোলে চিহ্নিত করার চেষ্টায় হাদীসে একটি পুরো অধ্যায়ই যোগ করা হোয়েছে। আমি এর কোন গুরুত্ব দেই না, কারণ প্রকৃত দাজ্জালকে আমি আল্লাহ ও তাঁর রসুলের দয়ায় চিহ্নিত কোরতে পেরেছি।বিশ্বনবীর সময় মানুষ যে বর্তমানের জুডিও-খ্রিস্টান যান্ত্রিক সভ্যতার মতো আত্মাহীন একটি মহাশক্তি সম্বন্ধে ধারণা কোরতে অসমর্থ ছিলো, যে জন্য তাঁকে এ সম্বন্ধে রূপক (অষষরমড়ৎরপধষষু) বর্ণনা কোরতে হোয়েছে, তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ এই এবনে সাইয়াদের (রাঃ) ঘটনা ও ওটাকে এত গুরুত্ব দেয়া।[দাজ্জাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যামানার এমামের লেখা ২০০৮ সালের বেস্ট সেলার বই “দাজ্জাল? ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতা” বইটি সংগ্রহ করুন। যোগাযোগ: হেযবুত তওহীদ, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫, ০১৮৫৩৯৯৩২২২, ০১১৯১৩৬৭১১০, ০১৭৮২১৮৮২৩৭, ০১৫৫৯৩৫৮৬৪৭]
See more at: http://desherpatro.com/2014/03/16/%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a7%82%e0%a6%aa%e0%a6%95-%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a3%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%8f%e0%a6%ac-2/
Posted via Blogaway
No comments:
Post a Comment