যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর লেখা থেকে-" প্রচলিত এসলাম কাদের তৈরি?"
রবিবার, অক্টোবর 20, 2013, 15:25বিশেষ নিবন্ধমন্তব্য যোগ করুন (দেশেরপত্র)
কয়েক শতাব্দী আগে ইউরোপীয় খ্রিস্টানরা যখন সামরিক শক্তিবলে মোসলেম ভূখণ্ড পদানত করে এবং এই মোসলেম নামধারী জনসংখ্যাকে পদানত গোলামে পরিণত করে তখনও এ জাতির অনেকের মধ্যেই এসলামের চেতনা, আল্লাহর হুকুমের প্রতি আনুগত্য ও মোসলেম হিসাবে শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতি কিছু হোলেও অবশিষ্ট ছিল, তাদের উপর আল্লাহ ও রসুলের হুকুম কী, এ ব্যাপারে তারা সচেতন ছিলেন অর্থাৎ আগুনের শিখা না থাকলেও ঈমানের উত্তপ্ত কয়লা তখনও গনগন কোরছিল। এ কারণে খ্রিস্টানরা ক্ষমতা লাভ কোরলেও তাদের কর্তৃত্ব¡ নিষ্কণ্টক ছিল না। বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনচেতা মোসলেমদের বিদ্রোহ লেগেই ছিল। পাক ভারত উপমহাদেশের পরিস্থিতিও এর ব্যতিক্রম নয়।
হাজী শরিয়তুল্লাহ ও তার পুত্র দুদু মিয়ার ফারায়েজী আন্দোলন, নুরুদ্দিন বাকের মোহাম্মদ জঙ্গের ফকীর সন্ন্যাসী আন্দোলন, ১৮৫৭ এর স্বাধীনতা সংগ্রাম, শহীদ তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার ঘটনাগুলি ব্রিটিশ শাসকদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনাগুলির প্রত্যেকটিতে ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতবর্ষকে দারুল হারব (যুদ্ধক্ষেত্র) ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করা হোয়েছিল। হাজার হাজার মোসলেম এসব আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে যোগ দিয়েছিলেন এবং বহু সংখ্যক জীবন উৎসর্গও কোরে গেছেন।এ অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ হিসাবে খ্রিস্টানরা যে কয়টি শয়তানী চক্রান্ত কোরল তার একটি হোচ্ছে নিজেদের তৈরি করা আল্লাহর সার্বভৌমত্বহীন, সম্পূর্ণরূপে জেহাদ বিমুখ, ভীরু, কাপুরুষ এবং খ্রিস্টান শাসকদের অনুগত নিবীর্য চরিত্রের মানুষে পরিণত করার জন্য বিকৃত এসলাম তৈরি কোরে মাদ্রাসার মাধ্যমে এ জাতির চরিত্রে, আত্মায় গেঁড়ে দেওয়া। (কেরামত আলী জৈনপুরী রচিত মুকাশাফাত-ই-রাহমা গ্রন্থে ১৩ পৃ:)। তারা অনেক গবেষণা কোরে একটি বিকৃত এসলাম তৈরি কোরল যাতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও জেহাদকে বাদ দেওয়া হোল এবং ব্যক্তিগত জীবনের মাসলা মাসায়েল, ফতোয়া, দোয়া কালাম, মিলাদের উর্দূ ফার্সী পদ্য বিশেষ কোরে যে বিষয়গুলি সম্পর্কে পূর্ব থেকেই বহু মতবিরোধ সঞ্চিত ছিল সেগুলিকে অন্তর্ভুক্ত কোরল।
এই আত্মাহীন মৃত এসলামটিকে জাতির মনে মগজে গেঁড়ে দেওয়ার জন্য এই উপমহাদেশের ভাইসরয় (ঠরপবৎড়ু) বা বড়লাট লর্ড ওয়ারেন হেসটিংকস ১৭৮০ সনে ভারতের তদানীন্তন রাজধানী কোলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরল।
সেখানে নিজেরা অধ্যক্ষ থেকে ১৯২৭ সন পর্যন্ত ১৪৬ বছর ধোরে মোসলেম জাতিকে সেই বিকৃত এসলাম শেখালো। এই শিক্ষাব্যবস্থার সিলেবাসে অংক, ভূগোল, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা ইত্যাদির কোনো কিছুই রাখা হোল না, যেন মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে আলেমদের রুজি-রোজগার কোরে খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এই দীন, ধর্ম বিক্রি কোরে রোজগার করা ছাড়া আর কোনো পথ না থাকে।
খ্রিস্টানরা এটা এই উদ্দেশ্যে কোরল যে তাদের মাদ্রাসায় শিক্ষিত এই মানুষগুলো যাতে বাধ্য হয় দীন বিক্রি কোরে উপার্জন কোরতে এবং তাদের ওয়াজ নসিহতের মাধ্যমে বিকৃত এসলামটা এই জনগোষ্ঠীর মন-মগজে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হোয়ে যায়। খ্রিস্টানরা তাদের এই পরিকল্পনায় শতভাগ সাফল্য লাভ কোরল।
তাদের এই মাদ্রাসা প্রকল্পের মাধ্যমে দীনব্যবসা ব্যাপক বিস্তার লাভ কোরল এবং এর মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যেও হিন্দুদের ব্রাহ্মণ, আচার্য, খ্রিস্টানদের পাদ্রী, ইহুদিদের রাব্বাই, সাদ্দুসাই, ফরিশি, বৌদ্ধদের শ্রমণ, ভিক্ষুদের মতো একটি স্বতন্ত্র পুরোহিত শ্রেণী প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ কোরল।
যে ২৬ জন খ্রিস্টান পণ্ডিত অধ্যক্ষ পদে থেকে কোলকাতা আলীয়া মাদ্রাসায় ৭৬ বছর ধোরে মোসলেম দাবিদার ছাত্রদেরকে বিকৃত এসলাম শিখিয়েছেন তাদের তালিকা
১. এ.এইচ. ¯িপ্রঙ্গার এম.এ. (১৮৫০)
২. উইলিয়াম ন্যাসলীজ এল.এল.ডি (১৮৭০)
৩. জে. স্যাটক্লিফ এম.এ. (১৮৭৩)
৪. এইচ. এফ. ব্রকম্যান এম.এ. (১৮৭৩)
৫. এ. ই. গাফ এম.এ. (১৮৭৮)
৬. এ. এফ. আর হোর্নেল (ঈ.ও.চ.ঐ.উ (১৮৮১)
৭. এইচ প্রথেরো এম.এ. (অস্থায়ী) (১৮৯০)
৮. এ. এফ. হোর্নেল (১৮৯১)
৯. এফ. জে. রো এম.এ. (১৮৯১)
১০. এ. এফ. হোর্নেল (১৮৯২)
১১. এফ. জে. রো এম.এ. (১৮৯৫)
১২. এ. এফ. হোর্নেল (১৮৯৭)
১৩. এফ. জে. রো (১৮৯৮)
১৪. এফ. সি. হল (বি.এ.টি.এস.সি) (১৮৯৯)
১৫. স্যার অর্যাল স্টেইন পি.এইচ.ডি (১৮৯৯)
১৬. এইচ. এ. স্টার্ক বি.এ. (১৯০০)
১৭. লে. কর্ণেল জি.এস.এ. রেঙ্কিং (১৯০০)
১৮. এইচ. এ. স্টার্ক বি.এ. (১৯০১)
১৯. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৩)
২০. এইচ. ই. স্টেপেল্টন (১৯০৩)
২১. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৪)
২২. এম. চীফম্যান (১৯০৭)
২৩. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৮)
২৪. এ. এইচ. হারলি এম.এ. (১৯১১)
২৫. মি. জে. এম. ব্রটামলি বি.এ (১৯২৩)
২৬. এ. এইচ. হার্টি এম.এ. (১৯২৫)
দীর্ঘ ১৪৬ বছর (১৭৮০ সালে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু কোরে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত ৭০ বছর মোসলেম নামধারী মোল্লাদেরকে অধ্যক্ষ পদে রেখে এবং ১৮৫০ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত ৭৬ বছর খ্রিস্টান পণ্ডিতরা নিজেরা সরাসরি অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত থেকে) এ খ্রিস্টান এসলাম শিক্ষা দেবার পর ব্রিটিশরা যখন নিশ্চিত হোল যে, তাদের তৈরি করা বিকৃত এসলামটা তারা এ জাতির হাড়-মজ্জায় ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হোয়েছে এবং আর তারা কখনও এটা থেকে বের হোতে পারবে না;
তখন তারা ১৯২৭ সনে তাদের আলীয়া মাদ্রাসা থেকেই শিক্ষিত মাওলানা শামসুল ওলামা কামাল উদ্দিন আহমেদ (এম.এ.আই.আই.এস) এর কাছে অধ্যক্ষ পদটি ছেড়ে দিলো --(আলীয়া মাদ্রাসার ইতিহাস, মূল- আঃ সাত্তার, অনুবাদ- মোস্তফা হারুণ, এসলামী ফাউণ্ডেশন, বাংলাদেশ। মাদ্রাসা-ই-আলীয়ার ইতিহাস, মাওলানা মমতাজ উদ্দীন আহমদ, এসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ)।
তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠিত আলীয়া মাদ্রাসার শুধু ঐ মাদ্রাসায় সীমিত না রেখে ব্রিটিশ শাসকরা তা বাধ্যতামূলকভাবে এই উপমহাদেশের সর্বত্র বেশির ভাগ মাদ্রাসায় চালু কোরল। উপমহাদেশ ভাগ হোয়ে পাকিস্তান হবার পর ঐ আলীয়া মাদ্রাসা উভয় পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবার পরও খ্রিস্টানদের তৈরি বিকৃত এসলামের সেই পাঠ্যক্রমই চালু থাকে; শুধু ইদানীং এতে কিছু বিষয় যোগ করার চেষ্টা হোচ্ছে যাতে মাদ্রাসায় শিক্ষিত দাখেল, ফাযেল ও আলেমরা দীন বিক্রি কোরে খাওয়া ছাড়াও ইচ্ছা হোলে অন্য একটা কিছু কোরে খেতে পারে। অর্থাৎ মোসলেম বোলে পরিচিত পৃথিবীর জনসংখ্যাটি যাতে কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য খ্রিস্টানরা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরে তাদের তৈরি যে প্রাণহীন, আত্মাহীন বিকৃত এসলামটা ১৪৬ বৎসর ধোরে শিক্ষা দিয়েছিলো সেই বিকৃত, আত্মাহীন এসলামটাকেই প্রকৃত এসলাম মনে কোরে আমরা প্রাণপণে তা আমাদের জীবনে কার্যকরী করার চেষ্টায় আছি।
আমরা বারংবার এই বিষয়টিই বোঝানোর চেষ্টা কোরছি যে, ধর্মব্যবসায়ী আলেম মোল্লাদের কাছ থেকে আপনারা যে এসলামটি শিখেছেন এবং প্রাণপনে মানার চেষ্টা কোরছেন সেটা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রকৃত এসলাম নয়, বরং এটা ব্রিটিশদের শেখানো বিকৃত ও বিপরীতমুখী এসলাম। উপকারী ফলের রস থেকে তৈরি হোলেও যেমন মদ স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর ঠিক তেমনই কল্যাণকর, শান্তিদায়ক এসলাম থেকে তৈরি বর্তমানের বিকৃত এসলামটি মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রকৃত এসলামটি মোসলেম জাতিকে সমস্ত পৃথিবীর কর্তৃত্বকারী শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত কোরেছিল আর বর্তমানের বিকৃত এসলামটি মোসলেমদের নির্যাতিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত, সর্বনিকৃষ্ট দাসজাতিতে পরিণত কোরেছে; সুতরাং সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায় দুটি এক জিনিস নয়। এই প্রচলিত এসলামটি তৈরি হোয়েছে ব্রিটিশ খ্রিস্টানদের হাতে।[যোগাযোগ: হেযবুত তওহীদ,
০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫, ০১৮৫৩৯৯৩২২২, ০১১৯১৩৬৭১১০, ০১৭৮২১৮৮২৩৭, ০১৫৫৯৩৫৮৬৪৭]-
See more at: http://desherpatro.com/2013/10/20/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ac-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%8d-3/#sthash.yLSL1oIW.dpuf
No comments:
Post a Comment