হেযবুত তওহীদের মোজাহেদ মোজাহেদাদের রাইগর মর্টিস না হওয়া প্রসঙ্গে ডকুমেন্টারি ফিল্ম ও আমার অভিজ্ঞতা।(মানে মৃত্যুর পরও শরীর তাজা থাকে)
*কাজী আবদাল্লাহ আল মাহফুজ*
রবিবার, জুন ২,২০১৩ ঈসায়ী (দেশেরপত্র)
>মানুষসহ সকল প্রাণীর মৃত্যু, পঁচন ও ক্ষয় অনিবার্য্য। মৃত্যুর পর কোন মানুষের মৃতদেহ যদি জীবতদের মত হয় অথবা কয়েক বছর পরেও কোন মৃতদেহ জীবিত মানুষের মত থাকে তখন আশ্চর্য হওয়া বৈ কোন উপায় আছে? এমনই অবিশ্বাস্য ও আশ্চর্যজনক বিষয়ের উপর একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মাণ ও আমার কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।আমি এ যামানার এমাম, এমামুয্যামান, জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর অনুসারী হেযবুত তওহীদের একজন মোজাহেদ।
মাননীয় এমামুয্যামান ২০০৯ সালে আমাকে এই মো’জেজা বা অলৌকিক বিষয়ের উপর একটি ডকুমেন্টারি ফিল্মটি ফিল্ম নির্মাণের দায়িত্ব অর্পণ করেন। পরবর্তীতে ২০১১ তে ‘দাজ্জাল প্রতিরোধকারীর সম্মান ও পুরস্কার’ নামে ডকুমেন্টারি ফিল্মটি প্রকাশিত হয়। মাত্র ৫৫ মিনিটের এ ডকুমেন্টারি ফিল্মটি নির্মাণ করতে আমার প্রায় দুই বছরের বেশী সময় লেগে যায়। এই ডকুমেন্টারি ফিল্মটি নির্মাণে যে সকল তথ্য-উপাত্ত ও ভিডিও ফুটেজ প্রয়োজন ছিল তা সংগ্রহ করতে গিয়ে আদ্যপান্ত সর্বক্ষেত্রেই আমাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ডকুমেন্টারি নির্মাণ করতে গিয়ে আমি সবচেয়ে আশ্চর্য হয়েছিÑ উদার গণতান্ত্রিক একটি দেশের মানুষগুলো কতটা সত্যবিমূখ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং সংকীর্ণ মানসিকতার তা দেখে। শুধু আমাদের দেশ নয়- বহির্বিশ্বে যারা নিজেদের উন্নত, নিরপেক্ষ, মানবিক ইত্যাদি বিশেষণে পরিচয় দিয়ে থাকেন, এসলামের প্রশ্নে তাদের স্বরূপও আমার কাছে এখন আর অপরিষ্কার নেই।যা হোক, আমার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করার আগে এমন একটি বিষয়ে ডকুমেন্টারি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা কেন হলো তার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করার দরকার মনে করছি।আল্লাহর অশেষ রহমতে মাননীয় এমামুয্যামান দাজ্জালকে চিহ্নিত করেছেন।
দাজ্জাল সম্পর্কীত রসুলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর যথার্থ প্রমাণ স্বাপেক্ষে তিনি দাজ্জালের স্বরূপ উপস্থাপন কোরেছেন ‘দাজ্জাল? ইহুদী-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’! নামক বইটি লিখে। বইটি প্রকাশের পর হেযবুত তওহীদের মোজাহেদ-মোজাহেদাগণ বাড়িতে, বাড়িতে গিয়ে, গ্রামে-গঞ্জে, বাসে, ট্রেনে, লঞ্চেÑ এক কথায় দেশের সর্বত্র এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে দাজ্জালের পরিচয় তুলে ধরতে থাকেন। এমনই একজন মোজাহেদ, আব্দুল হান্নান ২০০৯ সালে বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান এবং এন্তেকাল করেন। কিন্তু এন্তেকালের সতের ঘণ্টা পরেও দেখা যায়, তার শরীর মৃত মানুষের মত ঠাণ্ডা ও শক্ত হয়নি। এমনকি তার কপালের একটি ক্ষত স্থান থেকে তখনো তাজা রক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকতে।পেশাগতভাবে মাননীয় এমামুয্যামান ছিলেন ডাক্তার। তাই আব্দুল হান্নানের এই অস্বাভাবিক অবস্থা তাঁকে ভাবিয়ে তোলে। কারণ, শুধু মানুষ নয়, যে কোন প্রাণীর মৃত্যু ঘটলে এক-দুই ঘন্টার মধ্যে মৃতদেহটি বরফের মত ঠাণ্ডা ও কাঠের মত শক্ত হতে শুরু করে এবং ১২ ঘন্টার মধ্যে শক্ত হয়ে যায়। প্রকৃতিতে এই নিয়মের কোন ব্যতিক্রম নেই। ডাক্তারি ভাষায় এ অবস্থাকে বলা হয় রাইগর মর্টিস। কিন্তু আব্দুল হান্নানকে ব্যতিক্রম দেখে মাননীয় এমামুযযামানের নির্দেশে আমরা হেযবুত তওহীদের জন্মলগ্ন থেকে যে সকল মোজাহেদ-মোজাহেদা এন্তেকাল কোরেছেন তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম প্রায় প্রত্যেকের বেলাতেই এমনটিই ঘোটেছে। অর্থাৎ তাদের শরীর রাইগর মর্টিজ হয়নি।এমন আশ্চর্য্যজনক ঘটনার কারণ মহান আল্লাহ এমামুযযামানের সামনে স্পষ্ট করে দিলেন দাজ্জাল সম্পর্কীত আরেকটি হাদীসের মাধ্যমে। একটি হাদীসে রসুলাল্লাহ বলেন- অভিশপ্ত দাজ্জালকে যারা প্রতিরোধ কোরবে তাদের মরতবা হবে বদর ও ওহুদ যুদ্ধের শহীদের সমান [আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বোখারী, মোসলেম]। কিন্তু শহীদ হলে মৃতদেহ এমন হবে কেন? এর উত্তর পাওয়া গেল পবিত্র কোরআনের সূরা আল-বাকারার ১৫৪ নম্বর আয়াতে। বর্ণিত আয়তে আল্লাহ বলেন- “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে তোমরা মৃত বোল না, বরং তারা জীবিত। কিন্তু তোমরা উপলব্ধি কোরতে পারো না”। শুধু সূরা বাকারা নয় সুরা আল-এমরানের ১৬৯ আয়াতেও একইভাবে উল্লেখ করলেন- “যারা আল্লাহর পথে নিহত হোয়েছে তাদেরকে তোমরা কখনোই‘ মৃত মনে কোর না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে রেযেক প্রাপ্ত”। সুতরাং হেযবুত তওহীদের মোজাহেদ মোজাহেদাগণ এন্তেকালের পর জীবিত মানুষের মত নরম এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকার একমাত্র কারণ তারা শাহাদাৎ বরণ করেছেন। কিন্তু তারা তো কোন যুদ্ধ করেনি, তাহলে শাহাদাৎ বরণ করলেন কিভাবে? এর একমাত্র জবাব হলো- তারা দাজ্জালকে প্রতিরোধ করার জন্য বদর ও ওহুদ যুদ্ধের শহীদের সমান মর্যাদা ও সম্মান পেয়েছেন।বিষয়টি আমাদের সামনে সুস্পষ্ট হোয়ে যাওয়ার পর এই আশ্চর্য্য ও অবিশ্বাস্য বিষয়টি পৃথিবীর মানুষকে জানানো আমাদের দায়িত্ব হয়ে পড়ল। সেই লক্ষ্যে আমরা দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করলাম এই আশ্চর্য্যজনক বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার জন্য। শুধু মেডিকেল কলেজ নয়, এদেশের অধিকাংশ ডাক্তারদের আমরা আহ্বান করলাম আমাদের যখন কেউ এন্তেকাল করবেন তখন যেন তারা নীবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। এই ঘটনা শুনে সকলেই বিস্মিত হলেন, বললেন এটা অসম্ভব; কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তাদের কাছ থেকে আমার কোন সাড়া পেলাম না। বরং তাদের নির্লিপ্ততাই আমাদের হতবাক করল।যা হোক, আমরা হাল ছাড়লাম না। দেশের ডাক্তাররা না এগিয়ে আসুক, আমরা বহির্বিশ্বের ডাক্তারদের জানাব, হয়তো এমন আশ্চর্য্য ঘটনার কথা শুনে তারা ছুটে আসবেন। সেই লক্ষ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথেও যোগাযোগ করলাম। কিছু ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ কোরলেন এবং তাদের চাহিদামত আমাদের বক্তব্যের প্রমাণাদি আমরা পাঠালাম কিন্তু ঐ পর্যন্তই। আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল বিষয়টি এসলাম সম্পর্কীত, আর এসলামের প্রশ্নে কারো সহযোগিতা আসবে না। হাসবুন আল্লাহ, আল্লাহই যথেষ্ট; তিনিই মোমেনদের একমাত্র সাহায্যকারী।
মাননীয় এমামুয্যামান সিদ্ধান্ত নিলেন নিজ উদ্যোগে এই অলৌকিক বিষয়ের উপর ডকুমেন্টারি নির্মাণ করে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করবেন। শুরু হলো আমার ডুকমেন্টারি নির্মাণে পথ চলা।মাননীয়, এমামুযযামানের দিকনির্দেশনায় ফরেনকিস বিভাগের বইপত্র, বিভিন্ন রকম ডকুমেন্টারি, ইন্টারনেট ও ব্যক্তিগতভাবে মৃতদেহের উপর আমাকে গবেষণা করতে হলো। ইঁদুর, বিড়াল, হাস-মুরগীসহ বিভিন্ন মৃত জন্তুদের পরীক্ষা করলাম। এরপর হেযবুত তওহীদের সদস্য নয় এমন লোকজনের মৃতদেহ পরীক্ষা করে দেখলাম। যারা শত শত লাশ নাড়াচাড়া করেন তেমন প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম থেকে শুরু করে আজিমপুর কবরস্থানের লাশ দফানকারী, গোসলদানকারী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের ডোম কেউ এই গবেষণা থেকে বাদ পড়লেন না। সব মিলিয়ে আমি এবং আমার সহযোগী যারা এ বিষয়ে কাজ করছিলাম হেযবুত তওহীদের কেউ এন্তেকাল করলেই তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য বিভিন্ন স্থানে ছুটে যেতে থাকলাম।এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে আমাদের পথচলা শুরু হলো, বলা চলে যেখানেই গেলাম সেখানেই শুধু বাধা আর অসহযোগিতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেলে হেযবুত তওহীদের যিনি এন্তেকাল করেছেন- তার পরিবারের অন্যরা হেযবুত তওহীদের সদস্য নয়, ফলে তাকে সময় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা ভিডিও করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেলÑ সব ঠিক আছে, হঠাৎ কোত্থেকে একজন মোল্লা শ্রেণীর লোক এসে ফটো তোলা হারাম এই ফতোয়া দিয়ে অন্যদের উত্তেজিত করে ফেলল। আমরা ঠিক মত কাজ করতে পারলাম না। অনেক ক্ষেত্রে মোল্লাদের ফতোয়া এমন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করল যে আমাদের ক্যামেরা ও অন্যান্য মালামাল রক্ষা কোরে সুস্থমত ঘরে ফেরাই দায় হয়ে পড়ল। অনেক জায়গাতে স্থানীয় মসজিদে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বাড়িঘর পর্যন্ত ভাঙচুর করা হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন বাধাই আমাদের আটকাতে পারে নি। মাননীয় এমামুযযামানের দোয়া আর মহান আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্যে এই ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মাণের জন্য আমরা পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত, ফটোগ্রাফ, ভিডিও ফুটেজ ইত্যাদি সংগ্রহ করতে সক্ষম হলাম। অবশেষে নির্মিত হলো মানব জাতির ইতিহাসের এক অনন্য ঘটনার প্রাণ্যচিত্র।আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তী পর্বে আপনাদের সামনে আরে কিছু ঘটনা তুলে ধরব এনশা-আল্লাহ।
যোগাযোগ: হেযবুত তওহীদ, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩, ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫, ০১১৯১৩৬৭১১০ www.hezbuttawheed.comPrint PDF
- See more at: http://desherpatro.com/2013/06/02/%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%A4-%E0%A6%A4%E0%A6%93%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A6-%E0%A6%B8%E0%A6%A6%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%BE/#sthash.ccFtQ7X0.LQWMszKC.dpuf
No comments:
Post a Comment