DESHERPATRO

Sunday, September 18, 2016

রাষ্ট্রীয় আইন বিষয়ে কুরআনের নির্দেশনা

লিখেছেন Sultan Ashiq Mahmud 

26 April 2013 at 02:30 · 

রাষ্ট্রীয় আইন বিষয়ে কুরআনের নির্দেশনা

ইসলামী আইন নিয়ে বিজ্ঞদের মধ্যে বিতর্কবহুকাল আগ থেকেই চলে আসছে। একদলের মতে ইসলামী আইন যেহেতু একটা বিশেষ ধর্মের আইন আরএকটা রাষ্ট্রে যেহেতু ইসলাম ভিন্ন অন্য ধর্মের মানুষও বাস করে যেহেতু ধর্মে চাপানোবা জোড় জবরদস্তির বিষয় নেই সেহেতু ইসলামী আইন রাষ্ট্রের সকল ব্যক্তির উপর চাপিয়েদেওয়া যায় না। একটি রাষ্ট্রের সবকটি মানুষ মুসলিম হলেই কেবল ইসলামী আইন প্রয়োগ করাসম্ভব।

দ্বিতীয় দল মনে করে ইসলামী আইন যদি রাষ্ট্রেপ্রয়োগ নাই হয় তাহলে কেন ইসলাম রাষ্ট্রীয় বিধান সম্পর্কে বর্ণনা ও নির্দেশনা দিয়েছে?অবশ্যই ইসলামী আইন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে থাকতে হবে। অর্থাৎ ইসলামী আইন অনুযায়ীইরাষ্ট্র চলবে।

প্রথম দলের বিজ্ঞদের মত ইসলামের আংশিক রূপপ্রকাশ করে। তাদের চিন্তাধারা শুধু অব্যবহারিক না অবাস্তবও। সব মানুষ কুরআনেরবিধান মেনে নিবে? যদি মেনে নেয়ও তাহলে তারা কোনও অপরাধ করবে না। তবে কুরআনেরশাস্তির বিধান কার উপর প্রযোজ্য হবে? দ্বিতীয় দলের বিজ্ঞদের মতও ইসলামের আংশিক রূপপ্রকাশ করে। তারা যে একটা বিশেষ ধর্মীয় আইন সকল নাগরিকের উপর প্রয়োগ করতে যাচ্ছেসেটা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে দুমড়ে মুচরে ফেলে দেয়। দুটোই ইসলামের কোনও অংশের সাথেসাংঘর্ষিক। কারন প্রথম দল ইসলামের রাষ্ট্রীয় রীতিনীতি পালন করতে পারছেন না। আরদ্বিতীয় দল ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রদানের নির্দেশটি পালন করতে পারছেন না।

এক্ষেত্রে সমাধান কি? একটু ভিন্ন আংগিকেচিন্তা করলে ধর্মগ্রন্থ কুরআন থেকেই সমাধান আসবে ইন শা আল্লাহ।

১. একটা দেশে যতগুলো মতাদর্শ থাকবে,প্রত্যেক মতাদর্শের জন্য রাষ্ট্রীয় আইন থাকবে। (কুরআন ৫:৪৩,৫:৪৬)

২. একজন ব্যক্তি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তখনসে পছন্দ করবে সে একটা মতাদর্শ মতাদর্শ পছন্দ করে নিবে। অর্থাৎ ভোটার তালিকার সময়সে তার মতাদর্শ পছন্দ করতে পারবে। তার বাছাই করার ব্যাপারে পুরুপুরি স্বাধীনতাথাকবে। সে যে কোনও সময় তার মতাদর্শ পরিবর্তন করতে পারবে। কোনও জোড় জবরদস্তির বিষয়নেই। (কুরআন ২:২৫৬, ৫:৪৩) তবে কোনও অভিযোগে অভিযুক্ত হলে তার নিষ্পত্তি না হওয়াপর্যন্ত সে তার মতাদর্শ পরিবর্তন করতে পারবে না।

৩. যখন একজন মানুষ যদি এমন কোনও অপরাধ করেযে তার নিজের মতাদর্শগোষ্টিতে আঘাত লাগে তাহলে তার নিজের মতাদর্শের আইন অনুযায়ীতার বিচার হবে। যেমনঃ একজন মুসলিম ছেলে হিন্দু মেয়ের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক করলেমুসলিম ছেলের বিচার হবে মুসলিম আইনে আর হিন্দু মেয়ের বিচার হবে হিন্দু আইনে।(কুরআন ৫:৪৪,৪৫,৪৭,৫০/২:২৫৬)

৪. যদি কোনও ব্যক্তি অন্য মতাদর্শের লোকদেরউপর আক্রমন করে তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিশোধ আইনে তার বিচার হবে। যেমনঃকোনও হিন্দু যদি মুসলিম ঘরে চুরি করে ঐ চোরের শাস্তি হবে মুসলিম আইন অনুযায়ী।অপরপক্ষে যদি কোনও মুসলিম পুরুষ যদি হিন্দু ঘরে চুরি তাহলে চোরের শাস্তি হবেহিন্দু আইন অনুযায়ী। (কুরআন ২:১৭৮-১৭৯)

৫. সাধারন (কমন) আইনসমূহ সবার উপর প্রযোয্যহবে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে পরামর্শের ভিত্তিতে সাধারণআইনগুলো নির্ধারিত হবে। প্রয়োজনের সাপেক্ষে তার পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তুমতাদর্শভিত্তিক আইনগুলির কোনও পরিবর্তন হবে না। (কুরআন ৪২:৩৮)

৬. গনতান্ত্রিক পন্থায় রাষ্ট্রপ্রধাননির্ধারন করা যাবে। ৬০% ভোট পেয়ে যদি একটি দল নির্বাচিত হয়। ৪০% ভোটের অন্য দলগুরুত্বহীন হবে না। তারাও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হবে। পরামর্শেরভিত্তিতেই কার্যক্রম পরিচালিত হবে। (কুরআন ৪২:৩৮)

আশা করি অন্যান্য ধর্মগ্রন্থও প্রত্যেকধর্মের সহাবস্থানের সুযোগ দেবে। সেক্ষেত্রে ধর্মমতের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একসাথে বসবাস করা যাবে। সবাই মিলে গড়ে তোলা যাবে শান্তির এক স্বদেশ শান্তির পরিবেশ। ব্যক্তিগতসামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনেও সবাই ধর্ম পালন করতে পারবে। সবাই মিলে মিশে শান্তিতেবসবাস করতে কে না চায়, কে না স্বপ্ন দেখে শান্তিময় সুন্দর স্বদেশ তথা সুন্দর একটিপৃথিবী গড়ার?

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ আনিস রহমান ভাই ও মেরাজুলআলম মেরাজ ভাই

No comments:

Post a Comment