কুরআন ও বৈজ্ঞানিক আলোকে ডারউইনের মতবাদের পতন :
ডারউইনের মতে সব জীবন্ত প্রাণীর পূর্বপুরুষ একই এবং পরে কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বৈচিত্র্য এসেছে, বিবর্তনবাদীদের মতে জীব জগতে শেষ পর্যন্ত বানর থেকে মানবের উৎপত্তি ঘটেছে। এসব মতবাদ কোন জোরালো বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণাদির উপর প্রতিষ্ঠিত না। এসব একটা কাল্পনিক মনগড়া মাত্র। আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঃ “তিনি তোমাদের মধ্যে থেকে তোমাদের জোড়া এবং প্রাণীর মধ্য হতে তাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবেই তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন।” (সূরাহ্ আশ শুরা : ১১)
উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, স্বভাবিক প্রজনন প্রক্রিয়ায় তিনি কোন বিবর্তনহীন ভাবেই মানুষ থেকে মানুষ ও অন্যসব প্রাণী থেকে প্রাণী সৃষ্টি করেছেন বা করেন। তিনি আরও বলেন : “আল্লাহর সৃষ্টি কার্যে কোন পরিবর্তন নেই। (সূরাহ্ আর রূম : ৩০) প্রাণীদেহ একটা জটিল রহস্যময় রাসায়নিক কারখানা। ডারউইন প্রাণীতত্ত্ববিদ ছিলেন, রসায়নবিদ ছিলেন না।
প্রাণীদেহের গঠনের পরিবর্তন শুধু রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্ভব। প্রাণীদেহ জীবকোষ দ্বারা গঠিত। একেকটা জীবকোষ একেকটা জটিল স্বয়ংক্রিয় রাসায়নিক কারখানা। জীবকোষের কেন্দ্রের ক্রোমোজোম-এ বিরাজ করে প্রগতি বংশধারা লতিকা (D N A) বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক (ডি-অক্্িররাইবোনিউক্লিক এসিড) যা এক ধরনের জটিল রাসায়নিক জৈব যৌগ। ১৯৬২ সালে এ রহস্যময় (D N A) আবিষ্কৃত হয়। চার রকমের জৈব ক্ষারকের পুঁতি বিন্যস্ত হয়ে তৈরি হয় একটি সুদীর্ঘ মালা (D N A) । এরূপ দু‘টো পুঁতির মালা শৃঙ্খল পাকানো দড়ির মতো পরস্পরের সাথে লতানো পেঁচানো থাকে, এ চারটা ক্ষারকের বিণ্যাস পরম্পরাক্রমে সাংকেতিক Code-এ লিখিত থাকে প্রজাতির বংশধারা বৈশিষ্ট্য। (D N A) -এর কার্যকলাপ ও কার্যক্রম খুবই জটিল ও রহস্যময় । (D N A) -এর বার্তাবহ Messenger হচ্ছে (R N A) (রাইবো নিউক্লিক এসিড) প্রত্যেকটির প্রাণীর জীব কোষের (D N A) -এর অনুর গাঠনিক বিন্যাস ভিন্ন ভিন্ন, পৃথিবীতে বিরাজমান প্রত্যেকটা উদ্ভিদ, প্রাণী ও জীব প্রজাতির (D N A) গঠনাকৃতি ভিন্ন ভিন্ন। বানর ও মানুষের জীব কোষের (D N A) -এর গঠনাকৃতি ভিন্ন ভিন্ন। (D N A) -এর রহস্য আল্লাহর কুদরত, সর্বজ্ঞতা, প্রজ্ঞাময় ও সৃজন নৈপুণ্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। শুধু চারটা সুনির্দিষ্ট জৈব ক্ষারক দ্বারা এরূপ একটা রহস্যাবৃত জটিল জৈব যৌগ কখনও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সৃষ্টি হতে পারে না।
একটা প্রজাতি অন্য প্রাজাতিতে রূপান্তর, এই (D N A) -এর গঠনের রূপান্তর ব্যতীত সম্ভব নয়। প্রাকৃতিক নির্বাচনে যোগ্যতমের উর্ধ্বতন ও পরিবেশ এই রূপান্তর ঘটাতে সক্ষম নয়। এজন্য গম ধানে পরিণত হয় না, ধান গমে পরিণত হয় না, বাঘ সিংহে পরিণত হয় না, সিংহ বাঘে পরিণত হয় না। তাই আল্লাহপাক উল্লেখিত আয়াতে বলেছেন : “তাঁর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই”। সূতরাং, ডারউইন ও বিবর্তনবাদীদের এসব মতবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পিত, যা কুরআনের আয়াত ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দ্বারা প্রমাণিত আর এই বিজ্ঞানময় কুরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য উত্তম ফায়সালাকারী বাণী।
তাইতো আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন ঃ “আমি তোমার প্রতি এই মহাগ্রন্থ এই উদ্দেশ্যে নাযিল করেছি যে, যে সমস্ত বিষয়ে লোকেরা মতভেদ করে তুমি যেন সেগুলোকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দাও, আর মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য এটা রাহমাত ও পথ নির্দেশক হিসেবে নাযিল করেছি (সূরাহ্ নাহ্ল : ৬৪)”
তথ্য সূত্র : কুরাআন মাজীদের উৎকর্ষের কিছু দিক-অধ্যাঃ গোলাম সোবহান-বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ অব বুক সোসাইটি,পৃঃ ৪৯,৫০।
হেদায়াহ এবং তাকওয়া দীনুল এসলামের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে বর্তমানে আমাদের আকিদা যেমন বিকৃত ও ভুল, তেমনি তাক্ওয়া ও হেদায়াহ সম্বন্ধেও আমাদের ধারণা ভুল। কোন দুষ্ট প্রকৃতির গোনাহগার লোককে যদি উপদেশ দিয়ে মদ খাওয়া ছাড়ানো যায়, চুরি-ডাকাতি ছাড়ানো যায়, তাকে মুসল্লী বানানো যায়, সওম রাখানো যায় তবে আমরা বলি- লোকটা হেদায়াত হোয়েছে। ভুল বলি। কারণ আসলে সে হেদায়াত হয় নি, মুত্তাকী হোয়েছে। তাক্ওয়া এবং হেদায়াহ দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
Thursday, October 29, 2015
কুরআন ও বৈজ্ঞানিক আলোকে ডারউইনের মতবাদের পতন :
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment