DESHERPATRO

Saturday, October 31, 2015

দীন বা ধর্মের বিনিময় নেবার বিরুদ্ধে নবী-রসুলদের কঠিন ভূমিকার কিছু বিবরণ পবিত্র কোর’আনে বর্ণিত হয়েছে।

দীন বা ধর্মের বিনিময় নেবার বিরুদ্ধে নবী-রসুলদের কঠিন ভূমিকার কিছু বিবরণ পবিত্র কোর’আনে বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
১। নূহের (আ:) এর ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! এর পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধন সম্পদ চাই না। আমার পারিশ্রমিক আল্লাহর নিকট। [সুরা হুদ-২৯, সুরা শুআরা – ১০৯, সুরা ইউনুস – ৭২]
২। হুদের (আ:) ঘোষণা: হে আমার সম্প্রদায়! আমি এর পরিবর্তে তোমাদের নিকট কোনো মজুরি চাই না। আমার পারিশ্রমিক তাঁরই নিকট যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমরা কি তবুও বুঝতে চেষ্টা করবে না? [হুদ-৫১, সুরা শুআরা – ১২৭]
৩। সালেহ (আ:) এর ঘোষণা: আমি তোমাদের নিকট এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। [শুয়ারা-১৪৫]
৪। লুতের (আ:) ঘোষণা: এর জন্য আমি কোনো মজুরি চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। [শুয়ারা-১৬৪]
৫। শোয়েবের (আ:) ঘোষণা: আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোনো মূল্য চাই না। আমার মজুরি জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে। [শুয়ারা-১৮০]
এমন আরো অনেক আয়াত আছে.... দৃষ্টিমানের এর বেশি দরকার হবে না।
ধর্মব্যবসায়ী আলেমগণ!
আমি দুঃখিত যে তিক্ত হলেও সত্যের খাতিরে এই আয়াতগুলো তুলে ধরতে হচ্ছে। এই আয়াতগুলোতে নবীদের বক্তব্য আল্লাহ আমাদের জানাচ্ছেন। নবীরা যদি মানুষের থেকে পারিশ্রমিক না নিয়ে ধর্মপ্রচার করে যেতে পারেন, আপনারা কী করে ধর্মকে পেশা বানিয়ে নিচ্ছেন? নাকি আপনাদের জন্য অন্য কোনো শরীয়াহ নাজেল হয়েছে?
.
জেনে বুঝে অথবা না জেনে আপনারা এই নবীদের আদর্শকে, আল্লাহর হুকুমকে গোপন করতে চাইছেন। এটা যদি ঘরে বসে মদ্যপান জাতীয় কোনো ব্যক্তিগত অপরাধ হতো আমরা আপনাদেরকে আল্লাহর সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্য ছেড়ে দিতাম।
.
একজন পাপী জানে যে সে পাপ করছে। সে আল্লাহর কাছে অনুতাপ করে। কিন্তু একজন জ্ঞানপাপী সেই পাপকে ফতোয়ার মারপ্যাঁচে পূণ্য বলে চালিয়ে দিতে চায়। তাতে সমাজ থেকে ন্যায়-অন্যায়ের মানদণ্ড হারিয়ে যায় এবং সমাজ অন্যায়পূর্ণ হয়ে যায়।
.
ধর্মব্যবসা কেবল ব্যক্তিবিশেষের জন্য ক্ষতিকর তা নয়, এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য ধ্বংসাত্মক। কারণ এতে ধর্মের চেহারা বদলে যায়। ধর্মের মানে বদলে যায়। আপনাদের অপকর্মগুলোর দায়ও ধর্মের উপরই বর্তায়। তথাপি আপনারা ধর্মকে নিজেদের হাতছাড়া হতে দেন না, কারণ ওটা আপনাদের পুজি।
.
আপনাদের এই অপরিণামদর্শিতা, অজ্ঞতা ও মূর্খতার কারণে ধর্ম মানবজাতির কোনো কল্যাণেই কাজে আসছে না, কেবল আপনার রোজগার চলছে, সেটা হারাম হলেও পেট তো ভরছে। কিন্তু দুনিয়াতে কি রোজগারের পথের অভাব পড়েছে যে আলেম সেজে ধর্ম বেচেই খেতে হবে।
.
আপনারা কি কখনো ভেবেছেন যে, স্রেফ ধর্মবিশ্বাসকে ব্যবহার করে আমরা সমাজের যাবতীয় অন্যায়, অপরাধকে নির্মূল করতে পারি, দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারি, জঙ্গিবাদ-অপরাজনীতি সবকিছুর সমাধান করে ফেলতে পারি?
.
চিন্তা করেন নি... কারণ আপনাদের চিন্তার কক্ষপথ কেবল স্বার্থচিন্তা। সারা বছর আপনারা রোজা-ঈদ-শীতকাল ইত্যাদি ধর্মব্যবসার সিজনের জন্য অপেক্ষা করেন। ধর্মের দ্বারা মানুষের কল্যাণ সাধনের পথ আপনারা জানেন না, আপনারা জানেন কেবল সুর করে মিলাদ পড়া, বিবি মহব্বতের ওয়াজ করা আর অমুক কাফের তমুক মুরতাদ বলে ফতোয়াবাজি করা।
.
এখন আল্লাহর ভয়ে হোক, মানুষের কল্যাণের চিন্তা থেকে হোক ধর্মব্যবসা ছাড়ুন। নয়তো সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন মানুষ আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। কেননা আল্লাহর রসুল বলে গেছেন, আলেমদের থেকে ফেতনা সৃষ্টি হবে, সেই ফেতনা তাদের দিকেই প্রত্যাবর্তন করবে।
.
অতএব, সাধু সাবধান!!!

No comments:

Post a Comment