DESHERPATRO

Friday, October 16, 2015

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ (3RD WORLD WAR) Coz of Dajjal Sovereignty.

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ (3RD WORLD WAR)
Coz of Dajjal Sovereignty.

মাত্র ৩০ সেকেন্ড! এই ৩০ সেকেন্ডের হেরফেরে বেধে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? কিন্তু এমন একটি সমীকরণই দেখিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট। 
দি ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ব পটভূমিতে এখন চলছে শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতি। আর এর জেরে বর্তমান বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দ্বন্দ্বে যেকোনো সময় বেধে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট ন্যাটোর প্রতিপক্ষ হতে পারে চীন ও রাশিয়া।
যুক্তরাজ্যের আরো দুই প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ও মিরর বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকে স্নায়ুযুদ্ধের পর চীন ও রাশিয়ার যুদ্ধের শঙ্কা অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। অবস্থাদৃষ্টে এখন যা মনে হয়, ছোট একটি বিরোধ বা মতপার্থক্য থেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যেতে পারে।
সিরিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে রাশিয়ার বোমা হামলাকে কেন্দ্র করে এমন আশঙ্কা বাড়ছে বলে উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি। সিরিয়ায় হামলা চালাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত কয়েকটি দেশের ওপর দিয়ে উড়ছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান। এমন অবস্থায় যেকোনো সময় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিমানযুদ্ধের শঙ্কা আছে। 
অন্যদিকে সিরিয়ার আকাশসীমা বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমানে ভরে গেছে। দেশটির আকাশে মুহুর্মুহু উড়ছে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমান। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট আইএসের বিরুদ্ধে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫টি হামলা চালাচ্ছে। আর কাসপিয়ান সাগর থেকে রাশিয়া প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫৫টি লক্ষ্যে হামলা চালাচ্ছে। 
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান একটি থেকে আরেকটি মাত্র ২০ মাইল দূরত্বে উড়ছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে গতিতে এসব যুদ্ধবিমান ছোটে তাতে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের হেরফেরে দুটি বিমানের সংঘর্ষ হতে পারে। যদি তাই ঘটে, তাহলে ওই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কমান্ডার এন এফ রিচার্ড টেলিগ্রাফকে বলেন, বোমা ফেলতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানের খুব কাছ দিয়ে উড়ছে। ছোট্ট একটা দুর্ঘটনা ঘটলেও দুটি বিমানের মধ্যে নিমিষে সংঘর্ষ ঘটতে পারে। আর এই ধরনের কোনো সংঘর্ষের ঘটনার ফল হবে অতি ভয়ংকর।
রিচার্ড জানান, হামলা শুরুর কিছুদিনের মধ্যে মার্কিন যুদ্ধবিমানকে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তু পরিত্যাগ করতে হয়েছে। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এড়াতে হয়েছে কয়েকবার। ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ইউএস এফ ১৬ যুদ্ধবিমান রাশিয়ার এসইউ ৩৪-এর কতটা কাছাকাছি অবস্থান করছিল।
সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলার নেতৃত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট জেনারেল চার্লস ব্রাউন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো ২০ মাইলের মতো দূরত্বে থাকছে। বিমানগুলোর যে গতি তাতে ৩০ সেকেন্ড এদিক-সেদিক হলেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সের্গেই কালিনহস বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে থাকা সাগরেও ন্যাটো ও রাশিয়া নৌসেনা মোতায়েন করেছে। আর প্রতিদিন নিত্যনতুন লক্ষ্যে হামলার ঘটনায় সিরিয়ার আকাশ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। যেসব দেশ সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে সেসব দেশের যুদ্ধবিমান, ড্রোনের মধ্যে যেকোনো সময় সংঘর্ষ হতে পারে। এতে করে তৈরি হতে পারে বৈশ্বিক সংকটের।
এদিকে ব্রিটেনের আকাশসীমা রক্ষা ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে গড়ে তোলা এক বাহিনীতে ১০০ জন করে সেনা পাঠাচ্ছে পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লাতভিয়া। কয়েক দিন আগে তুরস্ক অভিযোগ করেছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। সব মিলিয়ে বিশ্বে এখন এক তালগোল পাকানো অবস্থা বিরাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিশেষজ্ঞ কেভিন ট্রনের মতে, সিরিয়ার আকাশ ক্রমশ যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র আর নানা সামরিক অস্ত্রে সজ্জিত যুদ্ধযানে সয়লাব। এমন সময়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর জন্য প্রয়োজন শুধু বারুদে একটুখানি উত্তাপ। পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরাও এমনই সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে কোনো সময় এসব যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোনের টক্কর লাগতে পারে। অপর এক সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেন, এক আকাশসীমায় এত জটিল একটি পরিস্থিতি অসম্ভব ব্যাপার। সিরিয়ার আকাশসীমায় সামরিক যানের উপস্থিতি দেখুন তা আসলেই ভীতিকর। যেকোনো সময় ভুল করে একটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করা হতে পারে। যদি তাই করা হয় তাহলে ভয়াবহ এক পরিণতি নেমে আসবে।
ট্রন আরো জানান, কাস্পিয়ান সাগর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সময় ইরাক ও ইরান পার হতে হয় রাশিয়ার অস্ত্রগুলোকে। এ ছাড়া সিরিয়ার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় আইএসের ঘাঁটিতেও অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। যার পাশেই তুরস্কের অবস্থান। সময়ের ছোট্ট একটু হেরফেরে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্কে যদি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তাহলে কোনো পক্ষ চুপ করে থাকবে না। এসব হিসাব মিলিয়ে প্রতিনিয়ত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় থাকতে হচ্ছে বিশ্ববাসীকে।

No comments:

Post a Comment