হাদিস কাকে বলে
★★★★★★★★★★★★
যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজাহানের
প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার
জন্য। সালাত ও সালাম তাঁর প্রিয়
নবী হাবীব মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ
(সঃ)-এর উপর।
হাদীস শরীফ মুসলিম মিল্লাতের এক অমূল্য
সম্পদ, ইসলামী শরই’আতের অন্যতম
অপরিহার্য উৎস এবং ইসলামী জীবন বিধানের
অন্যতম মূল ভিত্তি। কুরআন মজীদ
যেখানে ইসলামী জীবন ব্যবস্থার
মৌলনীতি পেশ করে, হাদীস সেখানে এ মৌল
নীতির বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও
তা বাস্তবায়নের কার্যকর পন্থা বলে দেয়।
কুরআন ইসলামের আলোকস্তম্ভ, হাদীস তাঁর
বিচ্ছুরিত আলো। ইসলামী গান-
বিজ্ঞানে কুরআন যেন হৃদপিণ্ড, আর হাদীস এ
হৃদপিণ্ডের সাথে সংযুক্ত ধমনী। জ্ঞানের
বিশাল ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত তাজা তপ্ত
শোণিতধারা প্রবাহিত করে এর অঙ্গ-
প্রতঙ্গকে অব্যাহতভাবে সতেজ ও সক্রিয়
রাখে। হাদীস একদিকে যেমন কুরআনুল আযীমের
নির্ভুল ব্যাখ্যা দান করে, অনুরূপভাবে তা পেশ
করে কুরআনের ধারক ও বাহক নবী করীম (সঃ)-
এর পবিত্র জীবনচরিত, কর্মনীতি ও আদর্শ
এবং তাঁর কথা ও কাজ, হিদায়াত ও উপদেশের
বিস্তারিত বিবরণ। এজন্যই ইসলামী জীবন
বিধানে কুরআনে হাকীমের পরপরই হাদীসের
স্থান।
আল্লাহ তা’আলা জিবরাঈল আমীনের
মাধ্যমে নবী করিম (সঃ)-এর উপর
যে ওহী নাযিল করেছেন, তা হলো হাদীসের
মূল উৎস। ওহী-এর শাব্দিক অর্থ ‘ইশারা করা’
গোপনে অপরের সাথে কথা বলা। ওহী দু
প্রকার। প্রথম প্রকার প্রত্যক্ষ ওহী যার নাম
‘কিতাবুল্লাহ’ বা ‘আল-কুরআন’। এর ভাব,
ভাষা উভয়ই মহান আল্লাহ্র। রাসুলুল্লাহ
(সঃ) তা হুবুহু প্রকাশ করেছেন। দ্বিতীয়
প্রকার পরোক্ষ ওহী এর নাম ‘সুন্নাহ’
বা ‘আল-হাদীস’। এর ভাব আল্লাহ্র,
তবে নবী (সঃ) তা নিজের ভাষায়, নিজের কথায়
এবং নিজের কাজে ও সম্মতির মাধ্যমে প্রকাশ
করেছেন। প্রথম প্রকারের ওহী রাসূলুল্লাহ
(সঃ)-এর উপর সরাসরি নাযিল হতো এবং তাঁর
কাছে উপস্থিত লোকজন
তা উপলব্ধি করতে পারত। কিন্তু দ্বিতীয়
প্রকারের ওহী তাঁর উপর প্রচ্ছন্নভাবে নাযিল
হতো এবং অন্যরা তা উপলব্ধি করতে পারত
না।
আখেরী নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
কুরআনের ধারক ও বাহক, কুরআন তাঁর উপরই
নাযিল হয়। আল্লাহ তা’আলা তাঁর
কিতাবে নামব জাতিকে একটি আদর্শ
অনুসরণের ও অনেক বিধি-বিধান পালনের
নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর বিস্তারিত
বিবরণ দান করেন নি। এর ভার ন্যস্ত করেছেন
রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর উপর। তিনি নিজের কথা-
কাজ ও আচার-আচরনের মাধ্যমে কুরআনের
আদর্শ ও বিধান বাস্তবায়নের পন্থা ও নিয়ম
কানূন বলে
হেদায়াহ এবং তাকওয়া দীনুল এসলামের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে বর্তমানে আমাদের আকিদা যেমন বিকৃত ও ভুল, তেমনি তাক্ওয়া ও হেদায়াহ সম্বন্ধেও আমাদের ধারণা ভুল। কোন দুষ্ট প্রকৃতির গোনাহগার লোককে যদি উপদেশ দিয়ে মদ খাওয়া ছাড়ানো যায়, চুরি-ডাকাতি ছাড়ানো যায়, তাকে মুসল্লী বানানো যায়, সওম রাখানো যায় তবে আমরা বলি- লোকটা হেদায়াত হোয়েছে। ভুল বলি। কারণ আসলে সে হেদায়াত হয় নি, মুত্তাকী হোয়েছে। তাক্ওয়া এবং হেদায়াহ দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
Thursday, September 17, 2015
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment