নাস্তিকরা বড়ই মুক, বড়ই বধির, বড়ই অন্ধ
লিখেছেনঃ হাসিব হায়াত (তারিখঃ শনিবার, ১৮/০১/২০১৪ - ১৭:৫৯)
উনিবিংশ শতাব্দির মধ্যভাগে প্রাণীর আদি উৎপত্তি সম্পর্কে চার্লস ডারউইন তার নিজস্ব মতবাদ ব্যাখ্যা করে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান। এই থিওরিতে বলা হয়- এক কোষা প্রাণী থেকে ক্রমবিকাশ বাদের ধারা মোতাবেক ব্যাঙ, বানর ও বন মানুষের পর্যায় পার হয়ে আমরা এখন মানুষে পরিণত হয়েছি। প্রানের ব্যাখ্যায় বলা হোল- কতিপয় বস্তুগত শক্তির কারনে প্রান নিজে থেকেই অস্তিত্ব লাভ করেছে যার মধ্যে রয়েছে তিনটি পর্যায়।
১। Reproduction – প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন নতুন জীবন সৃষ্টি হওয়া।
২ । Variation - উৎপন্ন বস্তুতে পার্থক্য সৃষ্টি হওয়া।
৩। Differntial survival – বংশ পরাম্পরায় উন্নতি লাভ করে কিছু পার্থক্যর সম্পূর্ণ হওয়া। চার্লস ডারউইনের এই সৃষ্ট ক্রমবিকাশবাদের ধারনাকে চূড়ান্ত মেনে নিয়ে ঐ সময়ের কিছু নামকরা বিজ্ঞানীরা আরও একধাপ এগিয়ে গেলো। জার্মানির বিজ্ঞানী কান্ট বললেন- আমাকে বস্তু যোগাড় করে দাও, পৃথিবী কিভাবে তৈরি করতে হয় আমি তা দেখিয়ে দেব। হিকেল বললেন- পানি, রাসায়নিক দ্রব্য এবং পর্যাপ্ত সময় পেলে আমি মানুষও তৈরি করতে পারবো। ভলটেয়ার বললেন- আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি করেনি বরং মানুষই কল্পনা থেকে আল্লাহকে সৃষ্টি করেছে। নিটেশ বললেন সবচে ইন্টারেস্টিং কথা- আল্লাহ এখন আর বেঁচে নেই! তবে আমার এবং আমার মতো আস্তিক চেতনার যারা ভাবুক আছে তাদের এখানে প্রশ্ন হোল-
এক কোষা প্রাণীর বিবর্তনেই যদি আমরা মানুষ হয়ে থাকি তবে কোটি কোটি বছর পার হয়ে যাবার পর আজও কেন ঐ এক কোষা প্রাণী গুলো এক কোষা প্রাণী হয়েই রয়েছে? ওরা কেন এখনও কোন পরিবর্তিত প্রানে রুপান্তরিত হচ্ছেনা? কিংবা ক্রমবিকাশবাদের ধারা অনুযায়ী এখন কেন ব্যাঙ, বানর ও বন মানুষের পর্যায় পার হয়ে কেউ মানুষ হচ্ছে না ? আর First cause অর্থাৎ যার থেকে বিবর্তনবাদ শুরু, সেই বা আসলো কোত্থেকে ? যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই, বানর থেকে পর্যায়ক্রমে মানুষ সতন্ত্র প্রানিতে রুপান্তরিত হয়েছে তবু প্রশ্ন থেকে যায়- মানব দেহের সাথে না হয় বানর দেহের অদ্ভুত সাদৃশ্য রয়েছে, কিন্তু জ্ঞানের ক্ষেত্রে? মানুষ এতো জ্ঞান পেলো কোত্থেকে? এছাড়াও বনমানুষ, বানর এদের লজ্জা শরম, গর্ব অহংকারও নেই। তাহলে এগুলো মানুষের মধ্যে বিকাশ লাভ করলো কিভাবে? কিংবা প্রয়োজন নেই বলে যে বলা হোল আপনা থেকেই নাকি আমাদের লেজ খসে পড়েছে, তাহলে প্রয়োজনের তাগিদে এখন কেন আমাদের দুটি পাখা গজাচ্ছে না? বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের দুটি পাখার কি খুব বেশী প্রয়োজন ছিলনা? এই প্রশ্নের উত্তর আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। বরং বিংশ শতাব্দিতে এসে একদল বিজ্ঞানী এখন সৃষ্টি জগতের এক অদৃশ্য পরিচালককে প্রমানের মাপ কাঠিতে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে পদার্থ বিজ্ঞানী দের জন্য যা বেশ অস্বস্তিকর। আলোচনা করতে করতে তারা একটা জায়গায় এসে থেমে যান।শুরু হয় আধ্যাত্মিকতা। কেউ কেউ আবার দ্যাখা যায় পদার্থ বিদ্যা ছেড়ে ধর্ম চর্চায় মন দেন। উজ্জ্বল উদাহারন হিসাবে বিখ্যাত পদার্থবিদ Jon Polkighon এর নাম বলা যায়, যিনি এখন চার্চের পাদ্রী। এছাড়াও ইংল্যান্ডের স্যার মার্টিন রিস হচ্ছেন পৃথিবীর সেরা জ্যোতির্বিদদের একজন। তিনি বলছেন প্রানের সৃষ্টি কোন দুর্ঘটনা না।. বিশ্ব জগত এবং তার নিয়ম কানুন এমনভাবে করা হয়েছে যেন প্রানের উদ্ভব হয়। আস্তিক ধারার একদল বিজ্ঞানীও বলছে- পৃথিবীতে প্রান সৃষ্টির ধারা দেখে মনে হয় একজন ডিজাইনার তার সমস্ত সৃষ্টি এমনভাবে পরিকল্পনা করেছেন যেন পৃথিবী নামক গ্রহে অতি উন্নত বোধ এবং চেতনার প্রানি জন্ম গ্রহন করে। সেই ডিজাইনার কে?নাস্তিক্যবাদের আরও একটি জনপ্রিয় যুক্তি হচ্ছে নিজেদের অসহায়ত্ত্বর জন্য অবচেতন মন থেকেই মানুষ এমন একজন অদৃশ্য সত্ত্বাকে কল্পনা করতে পছন্দ করে, যে তার জন্য গায়েবীভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে। তাই দ্যাখা যায় অনেকে শেষ বয়সে এসে দাড়ি টুপী রেখে রীতিমতো মসজিদে যেতে শুরু করে, কেউবা আবার রোগ শোকে পড়লেই কেবল আল্লাহকে স্মরণ করে । কিন্তু চূড়ান্ত অসহায়ত্ত্ব বোধে মানুষের মধ্যে কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কাছে হাত পাতার এই চেতনাটি কিভাবে প্রবেশ করলো, সেই ব্যাপারটি তারা একবারও ভেবে দেখেনা। কমন একটা উধারন দিয়ে আলোচনাকে আরেকটু গভীরে নিয়ে যাই। আমরা জানি যে, সাপের সাথে লড়াই করার সময় বেজি যখন আক্রান্তু হয় তখন সে সোজা দৌড়ে গিয়ে বনের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং কোন এক গাছের বাকলের সাথে শরীর ঘষামাজা করে বিষমুক্ত হয়। কারন বেজির মধ্যে জন্মগত ভাবেই এরকম প্রোগ্রামিং করা থাকে যে, এই পরিস্থিতিতে তোমার এটাই করনীয়। এখন প্রশ্ন হোল, বোধহীন বেজির মধ্যে যদি সৃষ্টিগতভাবেই এমন বিস্ময়কর প্রোগ্রামিং করা থাকতে পারে, সেখানে মানুষের মতো অতি উন্নত বোধের প্রাণীর মধ্যে অদৃশ্য শক্তিকে ডাকার প্রোগ্রামিংকে কোন যুক্তিতে নাস্তিক সমাজ অকার্যকর ঘোষণা করে তা অবশ্যই তর্ক সাপেক্ষ। সেটা হয়তো এই কারনে, একটি দৃশ্য আর আরেকটি অদৃশ্য। কিন্তু শরীরের ব্যাথা মানুষ দ্যাখাতে পারেনা বলে ব্যাথার পুরো ব্যাপার টিকে কাল্পনিক বলা কি খুব বুদ্ধিমানের কাজ?
আস্তিক নাস্তিকের শাশ্বত যুদ্ধ চলতে থাক আর স্রষ্টার কাজ করুক স্রষ্টা। ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা) জনৈক নাস্তিকের সাথে তর্কের একপর্যায়ে বললেন যে, যদি পরকাল না থাকে তাহলে জাহান্নামের আজাব থেকে তুমিও বেঁচে গেলে আর আমিও বেঁচে গেলাম। আর যদি থেকে থাকে তাহলে আমি বেঁচে গেলেও তুমি কিন্তু ফেঁসে যাবে। একথা হজরত আলী (রা) একারনে বলেননি যে, ওনার পরকাল নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিল, বরং একারনে বলেছিলেন যেন জনৈক নাস্তিক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস এনে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে। চোখের সামনে একজন মানুষ যদি আগুনে পুড়তে থাকে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করার নামই তো মানবতাহাতে গোনা দুই একজন ছাড়া আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত বিখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক এসেছেন তারা কখনোই স্রষ্টাকে অস্বীকার করেননি। তার আর কিছু স্বীকার করুক বা না করুক অন্তত এটুকু স্বীকার করেছেন যে- এই যে বিশাল সৃষ্টিজগত তা সুপরিকল্পিত ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য এর পেছনে কেউ না কেউ অবশ্যই একজন আছে। বিংশ শতাব্দিতে এসে কোন বিবেক বোধ সম্পন্ন মানুষ কখনো নাস্তিক হয়না। নাস্তিক হয় তারাই যারা আল্লাহর প্রকৃত পরিচয়কে চিনতে পারেনা। মানুষ যখন নাস্তিকতার দিকে ধাবিত হয়ে যায় তখন আর তারা আল্লাহর কোন কথাই শুনতে চান না। অনেক বাবা মার যেমন অবাধ্য সন্তান থাকে, তেমনি তারাও হয়ে যান স্রষ্টার অবাধ্য সৃষ্টি। আমি এর আগেও নাস্তিকদের নেতিবাচক কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ একজন মানুষের নাস্তিক হবার পেছনে যে যে কারন গুলো থাকে তা তুলে ধরবো-
১। জীবনে চাওয়ার সাথে পাওয়ার অসমাঞ্জস্যতার কারনে ব্যাক্তিগত হতাশা বোধ থেকে অনেকে নাস্তিকতার দিকে ঝুকে পড়ে। তারা ভাবে আল্লাহ যদি সব কিছুই পারতেন তাহলে আমার এই চাওয়াটা কে কেন পুরন করতে পারলেন না।
২। সব ক্ষেত্রেই নিজেকে অতিরক্ত বড় ভাবার প্রবণতা এবং অহংকার করাও নাস্তিকতার দিকে ঝুকে পড়ার একটি বড় কারন।
৩। বয়ঃসন্ধিতে কু সঙ্গে মেতে থাকার কারনে এবং পারিপার্শ্বিক ভাবে প্রভাবিত হওয়ার কারনেও অনেকে নাস্তিক হতে পারে।
৪। পারিবারিক ভাবে কঠিন ধর্মীয় বিধি নিষেধের মধ্যে বড় হওয়ার কারনে অনেকের মধ্যে ধর্ম এবং আল্লাহ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়।
৫। স্রষ্টা সম্পর্কে সঠিক মূল্যবোধের অভাব না থাকাটাও নাস্তিকতার অন্যতম কারন।
৬। নিজেই নিজের ভাগ্য তৈরি করতে সক্ষম এমন ভাবার কারনে অনেকে নাস্তিকতার পথে প্রবেশ করে। ৭। সৃষ্টিতত্ত্বর ব্যাপারে মন এবং মননের পরিপূর্ণ বিকাশ না হওয়া নাস্তিকতার বড় কারন।
৮। ধর্মীয় অনুশাসন পছন্দ না হওয়া নাস্তিক হবার পেছনে প্রভাব ফেলে। (যেমনটি অনেকে ছোট কালে পড়া লেখা ভালো না লাগার কারনে পড়া লেখাই ছেড়ে দ্যায়।)
৯। আত্মতত্ত্ব এবং আত্ম শুদ্ধি সম্পর্কে উদাসীনতা নাস্তিকতার বীজ কে উস্কে দ্যায়।
১০। পৃথিবীর অতিরিক্ত মোহে পড়ে পরকালকে অর্থহীন মনে করাও নাস্তিকতার পথকে আরও সুগম করে।
১১। আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারনেও একটি লোক নাস্তিকতাকে স্বেচ্ছায় বরণ করতে পারে।
১২। মাত্রাতিরিক্ত সাহস থাকা এবং মৃত্যুর ভয়াবহতা সম্পর্কে চিন্তা না করাও আল্লাহকে অস্বীকার করার একটি মানসিক জীবাণু।
১৩। ধ্যান বা অনুধাবন না করা আস্তিকতার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা ।
১৪। আনুগত্তের অভাব বা প্রত্যেকটা কাজের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে এই ব্যাখ্যা পছন্দ না হওয়ার জন্যউ কেউ যদি নাস্তিক হয়ে যায় তবে সেই দৃষ্টান্তও বিরল নয়।
১৫। কতিপয় পথভ্রষ্ট ধার্মিকদের পাশবিক কর্মকাণ্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে অনেকে নাস্তিকতাকেই সঠিক মনে করে। এছাড়াও একজন সম্ভাবনাময় যুবকের নাস্তিকতার দিকে চলে যাওয়ার পিছনে আরও অনেক কারন আছে, যা এই সল্প পরিসরে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না। তবে কেউ যদি দুর্ভাগ্য বশত নাস্তিকতার দিকে ধাবিত হয়, তবে তার চার পাশের মানুষদের উচিৎ হবে তাকে ক্রমাগত ধিক্কার না দিয়ে ভালো কোন আধ্যাত্মিক গুরু অথবা সূফী সাধকের কাছে নিয়ে যাওয়া। এছাড়াও তাকে এড়িয়ে চলা বা গালিগালাজ করাটাও হবে বুমেরাং স্বরূপ। কারন এতে তার মনে আস্তিকদের সম্পর্কে বিরুপ ধারণা তৈরি হবে এবং সে আক্রোশের বর্ষবর্তি হয়ে দ্বিগুণ কালো শক্তির দিকে ধাবিত হবে। যা অন্যান্য সরল প্রান দেরকেও তার পথে আকৃষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই বিবেক সম্পন্ন লোকের মাত্রই উচিৎ হবে তাদের জন্য সর্বদা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা এবং তাদেরকে আন্তরিকতার সাথে সত্যর পথে আহবান করা। কারন যে সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে পেয়েছে সে শুধু স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাববেনা, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্যই তার একটা সহমর্মীতা কাজ করবে। দ্রঃ এই সামান্য ব্যাপার গুলো বোঝার জন্য কারো নাস্তিক বিশেষজ্ঞ হবার প্রয়োজন নেই। বুদ্ধি সম্পন্ন ভাই বোনেরা খুব সহজেই এটা বুঝতে পারবে। নাস্তিকরা বড়ই মুক, বড়ই বধির, বড়ই অন্ধ। তারা অনায়াসে ইলিশ মাছ টুকু খেতে পারে, অথচ পুঁটি মাছ তাদের গলায় ঢোকে না। তারা গৌতম বুদ্ধকে বলে নপুংশক, ইসা নবীকে বলে জারজ, হজরত মোহাম্মাদ (সাঃ) বলে খুনি আর শ্রীকৃষ্ণ কে বলে কাল্পনিক মূর্তি! তাদের কাছে যারাই আল্লাহর বানী নিয়ে আসে তাদেরকেই তারা মিথ্যাবাদি ভণ্ড বলে পরিগনিত করে। অথচ তারা কি ভেবে দেখেনা, নভোযানের মতো বিস্ময়কর একটি জিনিসের যদি সৃষ্টি কর্তা থাকতে পারে, তবে তারও অধিক বিস্ময়কর সৃষ্টি মানুষের সৃষ্টিকর্তা থাকবেনা? তারা বলে সব সৃষ্টির পিছনে যদি একজন স্রষ্টা থেকে থাকে, তবে সৃষ্টিকর্তার স্রষ্টা কে? তার মানে কি গর্দভ দের কথায় আমরা ধরে নেব আল্লাহ তার নিজেকে নিজেই সৃষ্টি করেছেন! এই কথা বলে আর মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে তারা মুচকি হাসে। কিন্তু তারা জানেনা গর্দভ কেউ নয়, কেবল তারা ব্যতিত। কারন তাদেরই যখন আবার জিজ্ঞেস করা হয়- তুমি যদি তোমার প্রেমিকার দুই গালে চুমো খেতে পারো তবে নিজের দুই গালে চুমো খেতে পারোনা কেন? তখন তারা একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলে- এটা কি করে সম্ভব? যত সব অবান্তর প্রশ্ন!আসল কথা হচ্ছে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে এটা তাদের কাছে বড় নয়, তাদের কাছে বড় হোল পৃথিবীর ভোগ বিলাসে মেতে থাকা।
তাদের যে বিবেক সম্পদ দেওয়া হয়েছে সেটাকে তারা কাজে লাগাতে চায়না। বরং মূর্খের মতো সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে নিজেদেরকে তারা গরু ছাগলের পর্যায়ে নামিয়ে আনে বলেই তারা পরকালে আল্লাহর কাছে নিজেদের কর্মফলের জবাবদিহিতার ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে চায়না। তারা বলে- এখানেই আমরা জন্মেছি এবং এখানেই মরে যাবো। কালের আবর্তন ছাড়া তো আর কিছুই ঘটে না। কিন্তু তারা কি ভাবেনা- গিস্মকালের প্রখর রোদে মাটি ফেটে যখন চৌচির হয়ে যায়, ঠিক তখন সমুদ্রের পানিকে মেঘমালায় পরিণত করে বৃষ্টির মাধ্যমে কি করে আল্লাহ আবার মৃত মাটিকে নতুন জীবন দান করেন? এবং কিভাবে সেই মাটিতে আবার নতুন করে ফসলও জন্মায়? জনৈক ইমানদার তর্কের এক পর্যায়ে এক নাস্তিককে বলেছিল- তোমার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে দোজখের আজাব থেকে তুমিও মুক্ত আমিও মুক্ত। কিন্তু কোনভাবে যদি তোমার কথা মিথ্যে হয়, তাহলে আমি বেঁচে গেলেও তুমি কিন্তু চিরকালের জন্য আগুনে পুড়তে প্রস্তুত থেক। কথাটা তিনি নাস্তিককে এজন্য বলেননি যে তার বিশ্বাস খুব দুর্বল, বরং এজন্যই বলেছিলেন, যেন নাস্তিকটি বিশ্বাসীদের খাতায় নাম লিখিয়ে হতভাগ্যদের দের দল থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে। সত্যিকারের আল্লাহতে বিশ্বাসীরা কখনো শুধু নিজেদের কথাই ভাবেনা, বরং সমগ্র মানব কুলের প্রতিও তাদের একটি বিশেষ আন্তরিকতা থাকে। এছাড়াও মুষ্টিমেয় দুই একজন ছাড়া বড় বড় সব বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, স্থপপ্তিরা কখনোই নাস্তিক হয় না। তারা আর কিছু মানুক আর না মানুক অন্তত এতো টুকু স্বীকার করে যে, এই যে বিশাল সৃষ্টি জগত এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য অবশ্যই কেউ না কেউ আছে।
সিকদার হাবিব এর---- সংগ্রহকৃত লেখা।
No comments:
Post a Comment