DESHERPATRO

Tuesday, February 21, 2017

ইয়াজিদিদের সম্বন্ধে মূল ধারণা- সুলতান আশিক মাহমুদ

ইয়াজিদিরা ইহুদি ও ইসলামের মত একেশ্বরবাদী। তাদের সর্বোচ্চ দেবতার নাম ইয়াজদান। যিনি সাতটি মহাত্মার উৎস এবং এর মধ্যে প্রধান 'মালিক তাউস। জরথুস্ত্রবাদের রীতি অনুসারে মালিক তাউসকে তারা ময়ূরদূত বা প্রধান দূত হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসলাম এবং খ্রিস্ট ধর্মানুসারেও মালিক তাউস হলো ইবলিশ শয়তান। ইয়াজিদিরা মালিক তাউসকে একজন পতিত দূত মানতে নারাজ বরং তারা বিশ্বাস করে মালিক তাউস হলো একজন সম্মানিত দূত। যার নাম সচরাচর ইয়াজিদিরা মুখে উচ্চারণ করে না। এছাড়া ইয়াজিদিরা বিশ্বাস করে, তারা আদমের সন্তান শহীদ বিন জাবের বংশধর। এবং অন্যান্য মানব জাতি আদম-হাওয়া দুইজনেরই বংশধর। এই কারণে ইয়াজিদিরা অন্য ধর্মের মানুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া দূরে থাক, মেলামেশা করা থেকেও নিজেদের বিরত রাখে তারা সযতনে। ইয়াজিদিরা অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের সামনে নিজেদের ধর্মীয় রীতি-অনুষ্ঠান কোন কিছুই পালন করে না। তাদের আচার-অনুষ্ঠান সবটাই অত্যন্ত গোপনে পালন করা হয়, যাতে কেউ না দেখে।

#ইহুদি, ক্রিশ্চিয়ানিটি ও ইসলাম থেকে ইয়াজিদি ধর্মমতে সৃষ্টি তত্ত্বে ভিন্নতা রয়েছে। তারা বিশ্বাস করে খোদা সর্বপ্রথম তাউস মালেকে সৃষ্টি করেন তাঁর নিজের রূহানী থেকে এবং তাকে অন্য কোন সৃষ্টিকে সিজদা না করার নির্দেশ দেন। এরপর খোদা অন্যান্য ছয় প্রধান ফেরেস্তাকে সৃষ্টি করেন এবং তাদেরকে পৃথিবী থেকে মাটি সংগ্রহের নির্দেশ দেন। তারা তা নিয়ে এলে তিনি ঐ মাটি দিয়ে আদমকে সৃষ্টি করেন এবং নিজের শ্বাস ফুঁকে দিয়ে তাকে জীবন দেন। এরপর তিনি ফেরেস্তাদের নির্দেশ দেন আদমকে সিজদা করার। এই নির্দেশ তাউস মালেক ছাড়া সকলেই পালন করে। খোদা তাকে সিজদা না করার কারণ জিজ্ঞেস করলে তাউস মালেক উত্তরে বলেন- “How can I submit to another being! I am from your illumination while Adam is made of dust.” তখন খোদা তার প্রশংসা করেন এবং সকল ফেরেস্তাদের সর্দার করে দেন। এরপর তাকে পৃথিবীতে তাঁর ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ দেন।

যদিও এ ঘটনায় শয়তানের গর্বীয় পাপের নিদর্শণ দেখা যাচ্ছে, তথাপি ইয়াজিদিগণ বিশ্বাস করে যে তাউস মালেক পৃথিবীতে খোদার প্রতিনিধি এবং নিশান বা এপ্রিল মাসের প্রথম বুধবার তিনি ধরায় আগমন করেন। আর তারা আরও বিশ্বাস করে যে, খোদা এদিনই তাউস মালেকে সৃষ্টি করেছিলেন। এ কারণে তারা দিনটিকে নববর্ষ হিসেবে উৎযাপন করে।

ইয়াজিদিগণ যুক্তি দেখান যে, আদমকে সিজদা করার আদেশ তাউস মালেকের জন্যে কেবলমাত্র একটা পরীক্ষা ছিল। কেননা, খোদা কোনকিছু আদেশ করলে তা অবশ্যই ঘটে। আর বাইবেল ও কোরআনও এমনটাই বলে। অন্য কথায়, God could have made him submit to Adam, but gave Tawûsê Melek the choice as a test. তারা বিশ্বাস করে যে, Tawûsê Melek এর জন্যে তাদের সম্মান এবং প্রশংসা is a way to acknowledge his majestic and sublime nature. আর এই আইডিয়াকে বলা হয়, “Knowledge of the Sublime”-(Zanista Ciwaniyê). অন্যদিকে, শেখ আদির আত্মা, তাউস মালেকের আত্মার প্রতিরূপ হওয়ায়, আদি তাউস মালেকের কাহিনী নিজে অবলোকন করেছেন এবং তার উপর বিশ্বাস এনেছেন।

লিখেছেন- সুলতান আশিক মাহমুদ

No comments:

Post a Comment