মুর্খ, নির্বোধ ও কুপমুণ্ডক বুদ্ধিজীবির দল
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) একদিন একাকী বসে আছেন।
তিনি হাসছিলেন, আবার কাঁদছিলেন। লোকেরা তার এ
অবস্থা দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কেন
এমনটি করছিলেন?
তিনি বলেন, আমি হাসছিলাম আমার জাহেলী জীবনের
একটি ঘটনা মনে করে। ঘটনাটি হলো, এক দিন
আমি সফরে বেরিয়েছিলাম। কিছুটা দূর অঞ্চলে। রাত
হয়ে গেলে আমার মন চাইলো একটু ইবাদাত করতে। তখন আমাদের
সকলেরই বহনযোগ্য ছোট্ট একটি মুর্তি থাকতো,
যেটিকে আমরা সফরে যাওয়ার সময় সাথে নিয়ে যেতাম ইবাদাত
করার জন্য।
আমার হঠাৎ খেয়াল হলো যে আমি আমার
মুর্তিটিকে সাথে আনিনি। ভাবতে লাগলাম কিভাবে একটু ইবাদাত
করা যায়। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। আমি আমার
কাছে থাকা খেজুরগুলোকে মণ্ড
করে তা দিয়ে একটি মুর্তি বানালাম এবং তার পুজা করলাম!
এরপর রাতে ক্ষুধা পেলো। কিন্তু খাবার কিছু নেই। যে খেজুর
সাথে ছিলো তা দিয়ে তো মুর্তি বানিয়েছি। কিছুক্ষন সহ্য করলাম।
এরপর যখন ক্ষুধাটা একটু বেড়ে গেলো, খেজুরের মণ্ড
দিয়ে বানানো মুর্তিটিকে ভেঙ্গে খেয়ে ফেললাম!
এই ঘটনা মনে করে আমি হাসছিলাম...
আমরা এতোটা বুদ্ধি বিবেচনাহীন কিভাবে হতে পারলাম!
কিভাবে এমন বেকুবের মতো কাজ করতে পারলাম! কি করে এত নীচু
প্রকৃতির ধ্যান ধারণা দিয়ে আমরা চালিত হতাম!
আর কাঁদছিলাম এটা মনে করে যে আল্লাহ যদি আমাকে হেদায়াত
না দিতেন তাহলে আমার কী পরিণতি হতো সেটা ভেবে!
ওমরের জাহেলী সময়ের মতো একই রকম কিংবা এর চেয়েও নীচু
প্রকৃতির বেকুবী কাজ আজ আমাদের সমাজের অনেক মানুষের
মধ্যে দেখতে পাই।
এরা সেক্যুলারিজম বা বস্তুবাদী দর্শনের মধ্যে নিজেদের
বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি খুজে বেড়ায়, যেখানে মানুষকে জন্তু
জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট ও নীচু বানিয়ে দেওয়া হয়
‘যা দেখি না তা বিশ্বাস করি না’ মন্ত্র পড়িয়ে...
এরা গণতন্ত্রের মতো ফালতু দর্শনের মধ্যে মুক্তি খুজে বেড়ায়,
যেখানে মানুষের মাথার মধ্যে থাকা জ্ঞান বুদ্ধিকে মুল্যায়ন
না করে শুধু মাথার খুলি গননা করা হয়...
এরা পুজিবাদের মধ্যে মানুষের জন্য ন্যায় পরায়ণতা খুজে বেড়া,
যেখানে লাগামহীম লোভ লালসা মানুষকে শয়তানের চেয়েও নিকৃষ্ট
ও স্বার্থপর বানিয়ে দেয়...
এরা আপন মুত্রে নির্ধারিত কুক্কুরীয় জাতীয়তাবাদের
মধ্যে মানবতার বিকাশ দেখতে পায়, যেখানে মানবতার জন্য তার
সকল কল্যাণকামিতা, উদারতা, নীতিবোধ সীমানার সামান্য
কাঁটাতারে বাধা।
এরা স্বার্থপর, নীচু, লোভী, কুপমুণ্ডক, নির্বোধ, মূঢ়, বিবেক বুদ্ধিহীন
একদল মানুষের রচনা করা নিকৃষ্ট আইনের মধ্যে শান্তি খুজে ফেরে...
অথচ এরা আসমান জমিনের স্রষ্টা ও প্রভু প্রতিপালক মহাজ্ঞানী,
চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী সত্ত্বার রচিত আইন বিধান ও জীবন ব্যবস্থার
মধ্যে মুক্তি খুজে পায় না!!!
এরা ফসীল দেখে লক্ষ কোটি বছর আগের সভ্যতার সন্ধান খুজে পায়...
অথচ চোখের সামনে উম্মুক্ত গোটা আকাশ পৃথিবী, পাহাড় পর্বত,
সাগর নদী, চন্দ্র সুর্য, গ্রহ নক্ষত্র, তার নিজের হাতা পা, চোখ কান,
জিহবা নাসিকা তথা এতো লক্ষ কোটি অনুপম সৃষ্টি দেখে তারা তার
অনন্য স্রষ্টাকে চিনতে পারে না...
সত্যিই বড় দুর্ভাগা এরা! এদেরকে যে যতো বড় বুদ্ধিজীবিই মনে করুক
না কেন এরা নিরেট মুর্খ, নির্বোধ ও কুপমুণ্ডক। এদের কাণ্ডজ্ঞান,
বুদ্ধি বিবেচনা বলতে কিছুই নেই।
এরা দু’পাতা বই পড়া জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে যতোই
অহংকারী ভাব দেখাক না কেন, এদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ
করা হবে তখন ঠিকই স্বীকার করে নেবে যে,
আমরা যদি শুনতাম, কিংবা আমাদের যদি সামান্যতম আকল জ্ঞান
থাকতো তাহলে আমরা আজ এই জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসি হতাম না!
(সূরা আল মুলক ৬৭:১০)
হে আল্লাহ! ভাগ্যে থাকলে তুমি এদেরকে হেদায়াত দান করো,
। এদের হাত থেকে আমার জাতির কিশোর যুবক তথা সকলকে রক্ষা করো। আমীন!!!
No comments:
Post a Comment