দুনিয়া শব্দটি আমরা কিভাবে নেই?আল্লাহ কি বোললেন?
বর্তমানের দুনিয়া ও রাসুলুল্লাহ (স) এর সময়কার দুনিয়ার অর্থ কি এক?
‘দুনিয়া'আরবী শব্দ যার অর্থ "পৃথিবী, ধরা,ধরনী,জগত, বিশ্ব,ইংরেজি (World,Universe)।
কোরানে আল্লাহ(Allah) এ শব্দটি যে অর্থে ব্যবহার কোরেছেন, মহানবী (দঃ)
যে অর্থে ব্যবহার কোরেছেন আজ সে অর্থে ব্যবহার হয় না।এই পরিবর্তন আরম্ভ হলো যখন এই দ্বীনে ভারসাম্যহীন সুফীবাদ প্রবেশ করলো। সুফীবাদের কায়-কারবার সব কিছু শুধু আত্মার ব্যাপার নিয়ে, ভারসাম্যহীন, পক্ষান্তরে আল্লাহ(Allah) ও তার রসুলের (দঃ)শেখানো ইসলাম(Islam) হলো দ্বীনে ওয়াসাত (কোরান-সূরা আল-বাকারা-১৪৩)
দুনিয়া ও আখেরাতের, দেহের ও আত্মার এক ভারসাম্যযুক্ত মিলন। এর যে কোন একটাকে এমন
কি আংশিকভাবেও ছেড়ে দিলে এর ভারসাম্য নষ্ট
হোয়ে যায়। পূর্ববর্তী ‘ধর্ম'গুলির যে বিকৃত রূপ আজ
পৃথিবীতে বর্তমান সেগুলিতে শুধু আত্মার ও আধ্যাত্মিক উন্নতির দিকটাই আছে। সুফীবাদ, ঐগুলির মত আত্মার শুদ্ধির প্রক্রিয়াকেই একমাত্র কর্তব্য বোলে মনে করে,অর্থাৎ তাই তাদের আকীদা। ঐ বিকৃত ‘ধর্ম'গুলির ও সুফীদের আত্মার উৎকর্ষ ও কেরামত করার শক্তি জন্মালেই হলো, বাকি পৃথিবীর মানুষ যত খুশী অন্যায়-অবিচার করুক, দুর্বলের ওপর সবল যত পারে অত্যাচার করুক, মানুষে মানুষে যত রক্তপাত হোক তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু শেষ ইসলাম(Islam) এসেছে সমস্ত দুনিয়াময় শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠা কোরতে এবং তাও সংগ্রাম- সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে। যেখানে দুনিয়াতেই একটি জীবন-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সেখানে সেই দুনিয়াকেই ত্যাগ বা তার গুরুত্ব কমিয়ে দেয়া কি কোরে অর্থবহ? আল্লাহ(Allah) কোরানে মোমেনদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই তিনি তাদের পৃথিবীর জমিন ও ক্ষমতা দান কোরবেন, যেমন তিনি পূর্ববর্তী
মোমেনদেরও দান কোরেছিলেন (কোরান-সূরা আন-নূর-৫৫)।
মোমেনদের যে তিনি পৃথিবীর ওপর
আধিপত্য, শক্তি দিতে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এ
ব্যাপারে একটিমাত্র আয়াত উদ্ধৃত কোরলাম,কোরআনে এ প্রতিশ্রুতি বহু বার আছে। পৃথিবীর জমিন ও ক্ষমতার সোজা অর্থ যে রাষ্ট্রীয় শক্তি ও আধিপত্য তা বুঝতে কি ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে? যে জাতির উদ্দেশ্যই হলো পৃথিবীর রাষ্ট্রশক্তি অধিকার
কোরে আল্লাহ(Allah)র দেয়া আইন-কানুন প্রতিষ্ঠা করা-সে জাতির কাছে দুনিয়া শব্দের অর্থ এবং অন্যান্য বিকৃত ধর্ম ও সুফিবাদের কাছে দুনিয়া শব্দের অর্থ অবশ্যই একই অর্থ হোতে পারে না এ কথা সাধারণ জ্ঞানেই (Common Sense)বোঝা যায়। শেষ ইসলামে(Islam)র উদ্দেশ্য ও বিকৃত
ধর্মগুলির ও সুফীবাদের উদ্দেশ্য একেবারে বিপরীতমুখী।বর্তমানে এই উম্মাহ তার অস্তিত্বের অর্থ ও উদ্দেশ্যের ঠিক বিপরীত দিকে চলছে, তাই দুনিয়া শব্দের অর্থও তার কাছে পূর্ববর্তী অন্যান্য বিকৃত ধর্মগুলির মতই হোয়ে গেছে। কোরানে আল্লাহ(Allah) ও হাদীসে তার রসুল (দঃ)
দুনিয়া শব্দ বোলতে অন্য অর্থ বোঝাচ্ছেন। সেটা হলো এই-আল্লাহ(Allah) ও তার রসুল (দঃ) এই জাতির, উম্মাহর জন্য যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থির কোরে দিয়েছেন সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের পথে এই পৃথিবীতে যা কিছু বাঁধা হোয়ে দাঁড়াবে তাই দুনিয়া। আল্লাহ(Allah)র রসুল (দঃ) কি কি লক্ষ্য স্থির কোরে দিয়েছেন তা পেছনে বহুবার বোলে এসেছি।
আল্লাহ(Allah) দুনিয়াকে প্রত্যাখ্যান কোরতে বলেন নি,তা বোললে তিনি কখনই আমাদের বোলতেন না এই দোয়া কোরতে যে- আমাদের পালনকারী! আমাদের এই দুনিয়াকে সুন্দর কোরে দাও এবং আখেরাতকেও সুন্দর কোরে দাও (কোরান- সূরা আল-বাকারা-২০১)।
শুধু তাই নয়, আল্লাহ(Allah) যে দোয়া আমাদের শিক্ষাচ্ছেন সেটাতে আখেরাত অর্থাৎ পরজীবনকে আগে বোলে দুনিয়া জীবনকে পরে বোলতে পারতেন।
বলেননি, আগে দুনিয়া তারপর আখেরাত বোলেছেন
এবং সঠিক বোলেছেন। কারণ দুনিয়া আমাদের
পরীক্ষা ক্ষেত্র, কর্মক্ষেত্র। এরই প্রতিফলন হবে আমাদের আখেরাত। কর্মক্ষেত্রই যদি আমাদের অসুন্দর হয়, ব্যর্থতাময় হয় তবে অবশ্যই আখেরাতও হবে অসুন্দর, ব্যর্থ। আজকের ‘মুসলিম(Muslim)' জাতির ইহজীবন যেমন অশিক্ষায়, কুশিক্ষায়, দারিদ্র্যে, ক্ষুধায় জর্জরিত, পরজীবনও হবে তেমনি কুৎসিত, ইহকালে যেমন অন্যান্য জাতির ঘৃণার,
অবজ্ঞার পাত্র, পরকালেও হবে তেমনি ঘৃণার পাত্র, এই
জীবনে যেমন অন্যের অনুকরণ, নকলকারী- ঐ জীবনেও দাঁড়াতে হবে তাদেরই সাথে। কাজেই আল্লাহ(Allah) প্রথমে দুনিয়া বোলছেন। ‘ধার্মিকরা' যে আকীদায়দুনিয়া দেখেন তাই যদি ঠিক হতো অর্থাৎ এ দুনিয়া কিছু নয় এর কোন দাম নেই, এটা অত্যন্ত ঘৃণ্য জিনিস, আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে বাধা, তবে দুনিয়াকে সুন্দর করার জন্য দোয়া করতে আল্লাহ(Allah) নিশ্চয়ই বোলতেন না,
বোলতেন দুনিয়া ত্যাগ করো। আরও একটা জিনিস লক্ষ্য করার আছে।
দুনিয়া ও আখেরাতকে সুন্দর করার
দোয়া শিখিয়ে তারপর আল্লাহ(Allah) বোলছেন,
"এবং আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করো।" অর্থাৎ যার
দুনিয়া ও আখেরাত দুটোই সুন্দর, শুধু সেই
রক্ষা পাবে আগুনের শাস্তি থেকে। আবার সেই ভারসাম্য, সেই পুলসেরাতের কথা এসে যাচ্ছে। পুলসেরাত যে পার হোতে পারবে না, যার ভারসাম্য নেই, সে পড়বে কোথায়? অবশ্যই আগুনে, কারণ পুলসেরাত জাহান্নামের ওপর থাকবে।
হেযবুত তওহীদ, সিকদার----
good analysis
ReplyDelete